রাজু আহমেদ সাহান- উল্লাপাড়া থেকে : আজ শনিবার (২১ অক্টোবর) ৫ কার্তিক শাস্ত্র মতে হিন্দু ধর্মালম্বীদের দুর্গাৎসবের মহা সপ্তমী। ভোরের আলো ওঠার সাথে সাথেই মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানাদি শুরু হয়েছে।
শুক্রবার রাতের শুরুতে দেবী আনন্দময়ীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে। চিন্তা-উদ্বেগ দূরে সরিয়ে রেখে হিন্দু ধর্মালম্বীদের আজ গাঁ ভাসবে সপ্তমীর জোয়ারে। মহালয়ার শিউলি বিছানো ভোরে শুরু হয়েছিল উৎসবের আলাপ। মহাসপ্তমীতে সেই সুর সপ্তমে পৌঁছে গেছে।
নিয়ম মতে, ষষ্ঠী যদি পূজার প্রিমিয়ার হয়, তাহলে সপ্তমী পূজার শুরু৷ শাস্ত্র মতে পূজার শুরুটা মহাসপ্তমীতেই। অবশ্য সে অপেক্ষায় থাকেননি ধর্মীয় সনাতনীরা। ষষ্ঠী থেকে বেজে গিয়েছে পূজার ঘণ্টা তবে মহাসপ্তমী থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে ভীড় জমাবে দর্শনার্থীরা। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌর শহর জুড়ে আলোর রোশনাই ছড়াচ্ছে৷ মধ্যরাত অবধি শুধু প্রতীমা দর্শন আর ঘোরাঘুরি চলবে।
মহাসপ্তমী সপরিবারের মা দুর্গার পিতৃগৃহে প্রবেশের দিন৷ দেবীর নবপত্রিকাস্নান ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা দিয়ে দিনের মুখ্য আচার শুরু হয়েছে৷ এতদিন পরে বাপের বাড়ি ফিরেছে মেয়ে৷ সুতরাং শুচি শুদ্ধ না করে মেয়েকে কি ঘরে তোলা যায়৷ তা না হলে অমঙ্গল হবে যে৷ তাই ভোর হতেই শুরু হয়ে যায় নবপত্রিকা স্নান৷ একে একে হয়েছে মহাস্নান, অষ্ট কলস স্নান, আবাহন, চক্ষুদান ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা৷ তারপর পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণ৷ উঠবে ঢাকের আওয়াজ।
সে অনুযায়ী, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সপ্তমী পূজার রীতি মেনে নবপত্রিকা (কলাবউ) স্নানের পর শুরু হয়েছে দুর্গার আরাধনা৷ এরপর ঘট বসিয়ে সঙ্কল্প৷ ফলনের দেবী হিসেবে মহাসপ্তমীতে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য আরও ৮টি গাছের সঙ্গে বেল গাছের শাখা কেটে রাখা হয় এই পূজাতে। বলা হয়, ষষ্ঠীর রাতে এই বেল গাছের শাখাতেই দেবী নেমে এসেছিলেন ও সারা রাত বিশ্রাম নিয়েছিলেন। এই নয়টি গাছের শাখাকে স্নান করিয়ে পূজার জায়গায় নিয়ে আসা হয় এবং এর পরেই মাটির প্রতিমায় হয় প্রাণ প্রতিষ্ঠা।
পৌর শহরের মিলন মন্দিরের আয়োজক কমিটির সদস্য ও পৌর পূজা উদযাপন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক তনু সাহা জানান, অন্য বছরের চেয়ে এবার আরো ঘটা করে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দুর্গাপূজার পাশাপাশি মন্দিরে মন্দিরে বিশ্বের শান্তি কামনা করে আরাধনা করা হবে।
উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবু সুজিত কুমার ঘোষ জানান, এ বছরে পৌর শহরে ৩০ টি সহ সারা উপজেলায় ১০০ টি মন্দিরে শান্তিপূর্ণভাবে দূর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা মন্দির কমিটির হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মন্দিরে স্বেচ্ছাসেবক সহ তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।