স্টাফ রির্পোটার : সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় বাগমারা বি. এস স্কুল এন্ড কলেজের অনিয়ম, দুর্নীতি, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে আদালতে মামলা করেছে চাকরী প্রার্থীরা।
গত বুধবার দুপুরে এই প্রতিষ্ঠানে ল্যাব সহকারী পদে চাকরীর আবেদনকারী নাইমা পারভীন, আয়া পদে শিল্পী খাতুন, পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে হাওয়া খাতুন যৌথ ভাবে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, নিয়োগ বোর্ডের সদস্যসহ মোট আট জনের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
চাকুরি প্রার্থীদের আদালতের মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায় , গত ২৬ সেপ্টেম্বর উল্লাপাড়া উপজেলার বাগমারা বি. এস স্কুল এন্ড কলেজে ৩ টি পদে জনবল নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে দুটি দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কতৃপক্ষ। পদগুলিতে চাকরির জন্য অভিযোগকারীরাসহ অনেকেই আবেদন করেন। আগামী ২৭ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারন করা হয়েছে। অথচ ২৫ অক্টোবর দুপুর পর্যন্ত অভিযোগকারীরা কেউই নিয়োগ পরীক্ষার কোন প্রবেশ পত্র পায়নি।
তাদের অভিযোগ সভাপতি ক্ষমতাশীন দলের নেতা হওয়ায় ভয়ভীতি দেখিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করতে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির অন্য সদস্যদের কাছ থেকে সাদা রেজুলেশন বহিতে জোরপূর্বক ৭ টি করে স্বাক্ষর নিয়েছেন ।
তাদের আরও অভিযোগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত ৩ টি পদে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হাফিজুর রহমান তার পছন্দের ব্যক্তিদের কাছ থেকে গোপনে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নিয়োগ দিচ্ছেন।
ল্যাব সহকারী পদে চাকরির আবেদনকারী নাইমা অভিযোগ করে বলেন , আমার পদে নিয়োগ পরীক্ষার যাচাই বাছাই কমিটি ৭ জনকে প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষার জন্য মনোনীত করেছেন। তারমধ্যে এক জনের কাছ থেকে ১৬ লক্ষ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে নগদ ৮ লক্ষ টাকা নিয়েছেন তাঁরা। যে কারনে আমরা প্রবেশ পত্র এখনও পাইনি। এ বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েও কোন ফল পাইনি বিধায় আদালতে মামলা দিয়েছি।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী শাহিনা পারভীন বলেন, মামলাটি আদালত আমলে নিয়েছেন। এখানে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি হাফিজুর রহমান, অধ্যক্ষ মাহমুদ আলী, উপজেলা ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ও মহা-পরিচালক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে মামলার বিবাদী করা হয়েছে।
বাগমারা বি. এস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদ আলী বলেন, তিনটি পদে মোট ১৭ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন। কলেজের পিওন দিয়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশ পত্র পৌছানো হচ্ছে। যে কারনে অনেকেই প্রবেশ পত্র পাননি। তবে খুব তারাতারি প্রবেশ পত্র পেয়ে যাবেন। এব্যাপারে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলার কপি পেয়েছি। পরীক্ষার বিষয়টি আইনগত ভাবে ভেবে দেখতে হবে।
এব্যাপারে বাগমারা বি. এস স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি হাফিজুর রহমানকে মুঠোফোনে বার বার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
নিয়োগ পরীক্ষার ডিজি প্রতিনিধি উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম জানান, আদালতে মামলা হয়েছে বলে মৌখিক ভাবে জানতে পেরেছি। এখনো কোন মামলার কপি পাইনি। পেলে আইনত দিক ভেবে দেখবো।
উল্লাপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সামসুল হক বলেন, দুদিন আগে এই নিয়োগ পরীক্ষার অনিয়মের বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছিলাম। সে বিষয়ে বাগমারা বি. এস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের সাথে কথা বলেছি।
উল্লাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোছা: খাদিজা খাতুন জানান, বাগমারা বি.এস স্কুল এন্ড কলেজের নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে দু'টি অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে তদন্ত করার জন্য পেয়েছি। খুব শীঘ্রই তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবো।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।