উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় পারিবারিক কলহের জেরে প্রকাশ্যে দিবালোকে স্বামীর ছুরিকাঘাতে খাদিজা খাতুন (৩০) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার দূর্গানগর ইউনিয়নের হেমন্তবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত খাদিজা উপজেলার হেমন্তবাড়ী গ্রামের বস্তা ব্যবসায়ী আব্দুল জলিলের ছেলে হাসান আলীর স্ত্রী এবং জেলার শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের ব্রজবালা গ্রামের দেলবার হোসেন প্রামানিকের মেয়ে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে নিহতের পরিবার।
মামলার বাদী আব্দুল মজিদ জানান, প্রায় ১২ বছর পূর্বে আমার বোন খাদিজার সঙ্গে পারিবারিকভাবে হেমন্তবাড়ী গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে হাসান আলীর সঙ্গে বিবাহ হয়। তাদের আব্দুল্লাহ (১০) ও জুনায়েদ (০৭) নামের দু'টি সন্তান রয়েছে। আমরা গরীব বলে মাঝেমধ্যেই বোনের স্বামী, শ্বশুর, দেবর ও তার স্বজনেরা তাকে দফায় দফায় নির্যাতন করে। এ নিয়ে কয়েক দফা পারিবারিক শালিসি বৈঠকে সোমঝোতা হয়। গত দেড় বছর আগে হাসান তার বাবা, ভাই ও বোন জামাইদের চাঁপে আমার বোন খাদিজাকে তালাক দেয়। পরে মামলার ভয়ে হাসানের বাবা জলিল আবারও তাদের বিবাহ ও রেজিষ্টি করে ঘরে নেয়। বেশকিছু দিন ভালোই ছিল। ঘটনার দিন হাসান তার বউকে শাসন না করায় এবং পুনরায় তালাক না দেওয়ায় তার বাবা জলিল ও দুই ভাই আরিফ এবং আজিম মিলে ব্যাপক মারপিট করে হাসানকে। মার খেয়ে হাসান বাড়ী ফিরে কোন কথা না বলে সরাসরি গরু জবাই করা ছুরি দিয়ে খাদিজাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত ও গুরুতর আহত করে। খাদিজা ঘটনাস্থলেই সজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। এ সময় তার দুই সন্তানের চিৎকারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এলে রক্তাক্ত খাদিজাকে ফেলে তার ঘাতক স্বামী হাসান পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা এ সময় পুলিশকে খবর দেয় এবং আহত খাদিজাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
মডেল থানার উপ পরিদর্শক মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে পৌছে নিহত খাদিজার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার শরীরের ছয়টি স্থানে ধারালো অস্ত্রের রক্তাক্ত আঘাত রয়েছে। শুক্রবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ ফজিতুলনেচ্ছা মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় অভিযোগ পেলে জড়িতদের খুব শীঘ্রই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।