শফিকুল ইসলাম : ক্ষমতার অপব্যবহার ও উদ্যেশ্য প্রণোদিত ভাবে সাখওয়াত হোসেন লিপনকে নিকাহ্ ও তালাক রেজিষ্টার ও কাজীর সহযোগী হিসাবে অনুমতি প্রদান করলেন রৌমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক।
৬ জুলাই ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নে এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে সাইফুল ইসলাম রৌমারী সদর ইউনিয়ন বিবাহ রেজিষ্টার হিসাবে নিয়োগ পান। এরপর থেকে সাবেক এমপি গোলাম হোসেনের পুত্র সাখওয়াত হোসেন লিপন আত্মীয়তার সুত্র ধরে কৌশলে নিকাহ রেজিষ্টারের কাজ করে আসতো। অপর দিকে এই সুযোগে লিপন উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দালাল নিযুক্ত করেন। কাজির অজান্তে, তাদের মাধ্যমে অভিভাবকদের ভুলভাল বুঝিয়ে গ্রামের অপ্রাপ্ত বয়সী ছেলে-মেয়েদের নাম ঠিকানা নোট খাতায় লেখে নিয়ে আসেন লিপন। পরে বিভিন্ন উকিলের স্বাক্ষর জাল করে এফিডেভিট করে বাল্য বিবাহ ও রেজিষ্টার করে অভিভাবকদের দেন। যারা নকল পায়নি সেই অভিভাবকরা বিবাহ রেজিষ্ট্রির নকল চাইলে দেই দিচ্ছি করে কালক্ষেপন করতে থাকে। মাঝে মধ্যে লিপনের আত্মীয় শৌলমারী ইউনিয়ন কাজি আব্দুল কাদের ও অষ্টমির চর ইউনিয়ন কাজি আব্দুল বারেক আনছারিসহ অসুদপায়ী অনেক কাজির নিকট থেকে নকল এনে ভুক্তভোগীদের দেওয়া হয়। অনেকে আবার নকল না পেয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ হলেও আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না। এনিয়ে গত ২৬ জুলাই মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় অবৈধভাবে নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার বিষয়ে আলোচনাও হয়।
অবৈধভাবে নিকাহ ও তালাক রেজিষ্টার ও এভিডেভিড করে দেয়ার কথা কাজি সাইফুল ইসলাম জানতে পারলে গত কয়েক মাস আগে সাখাওয়াত হোসেন লিপনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দেন। এর ফলে সাখাওয়াত হোসেন লিপন আরোও বেপরোয়া হয়ে উঠে। এর জেরে সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের সাথে সক্ষতারেখে, গত ৬ জুলাই রৌমারী ইউনিয়ন পরিষদ প্যাডে নিকাহ ও তালাক রেজিষ্টার হিসাবে কাজ করার অনুমতি লিখিতপত্র দেন সাখাওয়াত হোসেন লিপনকে। এর ক্ষমতার বলে রৌমারী ইউনিয়নের সকল এলাকায় লিফলেট পোষ্টার লাগিয়ে ও দালালের মাধ্যমে বেপরোয়া ভাবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েদেরকে ভুয়া এভিডেভিড করে আসছেন। ফলে কোনক্রমেই বাল্য বিবাহ ঠেকানো যাচ্ছে না।
এবিষয়ে সাখাওয়াত হোসেন লিপন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমাকে নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার হিসাবে কাজ করার লিখিত অনুমতি দিয়েছেন। তাই আমি এলাকায় বিবাহ রেজিষ্টার করে আসছি।
রৌমারী সদর ইউনিয়ন নিয়োগ প্রাপ্ত কাজি সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি কাউকে সহযোগী কাজি হিসাবে নিয়োগ দেইনি এবং আইনেও নেই।
এ বিষয়ে রৌমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সাখাওয়াত হোসেন লিপনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাজি সাইফুলের সাথে নিকাহ ও তালাক রেজিষ্টার করার সহযোগী হিসাবে কাজ করার এভিডেভিডের কাগজপত্র যাছাই-বাছাই অন্তে সাময়িক নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার হিসাবে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।