শফিকুল ইসলাম : রৌমারী ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ী ঢলে আবারও সব নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। ব্রহ্মপুত্র, সোনাভরী, হলহলিয়া, জিঞ্জিরাম নদীর পানি তিন দিন ধরে বেড়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও চরাঞ্চলের নিম্নঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে রোপা আমন ও শাকসবজি ক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে গেছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুলা আল মামুন বলেন, ভারী বৃষ্টির কারণে ব্রহ্মপুত্র, সোনাভরি, হলহলিয়া ও জিঞ্জিরাম নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও বড় ধরনের কোনো বন্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই।
রোববার সন্ধ্যা ৬টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুড়িগ্রমের তথ্যমতে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫৯ সেন্টিমিটার, রৌমারী পয়েন্টে ৬৯ সেন্টিমিটার নদীর পানি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের ফলুয়ার চরের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহ থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে চরের নিম্নাঞ্চল প্রাবিত হয়েছে। এতে ফলুয়ারচর, চরবাঘমারা, পালেরচরও নটারকান্দি এলাকায় প্রায় ৬৫ হেক্টর আমন ধান ও ৭ হেক্টও শাকসবজি পানিতে ডুবে গেছে। ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে পানি যেভাবে বাড়ছে, তাতে করে ডুবে যাওয়া ধান পানির নিচে তলিয়ে যাবে। বর্ষা মৌসুমের শেষ সময়ে বন্যা হলে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে।
গত মাসে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে নিচু জমিতে আমন ধানের বীজ ছিটিয়েছিলেন বন্দবেড় ইউনিয়নের ফলুয়ার’চরের কৃষক আজিজুল হক বলেন, কয়েক দিন থেকে ভারী বৃষ্টিতে আমার ৬২ শতক ধানখেত ডুবে গেছে। এবার বড় বন্যা দেখা না দিলেও দেড় মাস ধরে বন্যার পানিতে আমার জমি ডুবে আছে। এ কারণে ডাল ও বাদাম চাষ পিছিয়ে যাচ্ছে।
রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল বাইয়ুম চৌধুরী বলেন, জুলাই মাসে কুড়িগ্রােেম সর্বশেষ বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় কৃষকেরা রোপা আমন চাষ শুরু করেন। কিন্তু কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ৫৩ হেক্টর জমির আমন ধান ও ৭ হেক্টর জমির শাকসবজির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তারা বন্যাকবলিত এলাকায় খোঁজখবর রাখছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, কুড়িগ্রামে উজানের ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক ত্রাণ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। জেলায় ৩৮৭ মে.টন চাল, ১০ লাখ ৫০ হাজার নগদ টাকা ও ৩ হাজার ৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য বাবদ ২ লাখ ও গো খাদ্য ক্রয় বাবদ পাঁচ লাখ টাকা নগদ মজুত আছে। বন্যার্তদের জন্য ১৮টি স্থায়ী ও ৩৬১টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র, চারটি রেসকিউ বোট ও ২৭৫টি স্থানীয় নৌকা, স্কাউট, রোভার স্কাউট এবং রেডক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তত রাখা হয়েছে। এছাড়াও বন্যার সময় নদী ভাঙন রোধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া আছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।