শফিকুল ইসলাম : রৌমারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গবাদিপশুর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে লাম্পি স্কিন রোগ (এলএসডি)। ভাইরাসজনিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত এক মাসে কয়েক শত গরু মারা যাওয়ার কথা জানা গেছে।
আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা জানা নেই প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার |
অপর দিকে এ রোগে প্রায় ৫ হাজার গরু আক্রান্ত হয়েছে। গবাদিপশুতে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষক ও খামারিরা।
চিকিৎসকরা বলছেন বিরূপ আবহাওয়ার কারনে এ বছর বর্ষা মৌসুমের আগেই লাম্পি স্কিনের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এ রোগ বিভিন্ন ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। সুনির্দিষ্ট প্রতিষেধক না থাকায় সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রায় গ্রামেই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৬’শ গরু মারা গেছে। তবে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা জানা নেই প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলেও আক্রান্ত পশু ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান তাদের কাছে নেই। আক্রান্ত পশু অনেক সময় ভুল চিকিৎসার কারনে মারা যেতে পারে।
সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিসের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যমতে, মূলত একপ্রকার পক্স ভাইরাস বা এলএসডি ভাইরাসের সংক্রমণে গবাদিপশুতে এই রোগ দেখা দেয়। এটি এক গরু থেকে আরেক গরুতে ছড়ায়। গরুর চামড়ার ওপরের অংশে গোটা সৃষ্টি হয়। সাধারণত বর্ষার শেষে, শরতের শুরুতে অথবা বসন্তের শুরুতে মশা-মাছির মাধ্যমে এই রোগ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের নওদাপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন, কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য একটি গরু পালন করেছি। কিন্তু গরুটি লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। অনেক চিকিৎসা করেছি ভালো হয়নি।
চান্দারচর গ্রামের মোস্তফা মিয়া জানান, আমার গরুটি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে ডাক্তার দেখাই। কিন্তু কোন ঔষুধে কাজ করে নাই। পরে গরুটি মারা যায়।
বন্দবেড় ইউনিয়নের ফলুয়ার চর গ্রামের সেকেন্দার আলী বলেন, আমার দামড়া গরুটির দাম উঠেছিল লাখ টাকা। বিন্ত এই রোগে গরুটি মারা গেছে।
একই গ্রামের চায়না খাতুন বলেন, আমি গরীব মানুষ। অনেক কষ্ট করে একটি বাছুর গরু কিনি। এক বছরে বাছুরটি অনেক বড় হয়েছে। বিক্রি করে অনেক টাকা পাবো,কিন্তু তা আমার ভাগ্যে জোটল না। গরুটি মারা গেছে।
পল্লী চিকিৎসক শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার এলাকায় অনেক গরুর মধ্যে লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিয়েছে। গত কয়েকদিনে আট-দশটি মারা গেছে। দিনে দিনে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বাড়ছে।
তবে আক্রান্ত পশু ও মৃত্যুর কোনও তথ্য জানাতে পারেননি রৌমারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চিকিৎসক ডা.মো. হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন বিরূপ আবহাওয়ায় এ বছর বর্ষার আগেই এই রোগ ছড়াচ্ছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, এই রোগে সাধারণত পশু মারা যায় না। অনেক সময় ভুল চিকিৎসায় মারা যায়। আমরা ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায় কৃষক ও খামারিদের সচেতন করার চেষ্টা করছি।আক্রান্ত গরুকে টিকা দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।
রৌমারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এটিএম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। এথন পর্যন্ত ১০০ থেকে ১৫০ টির মতো গরু আক্রান্ত হয়েছে। তবে ৮-১০টি গরুর মৃত্যুর খবরও পেয়েছি।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।