শফিকুল ইসলাম : পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন রৌমারী উপজেলার পাট চাষিরা। চলতি মৌসুমে পাট কাটা শুরু হয়েছে। তবে উপজেলার অধিকাংশ খাল, বিল ও জলাশয়ে তেমন পানি নেই।
যে পরিমাণ পানি রয়েছে, তা পাট পচানোর জন্য যথেষ্ঠ নয়। অনেকটা বাধ্য হয়ে পাট চাষিরা পাট কেটে ক্ষেত থেকে বিভিন্ন যানবাহন দিয়ে দূরের জলাশয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে পরিবহন খরচ বেড়ে যাচ্ছে অনেক।
রৌমারী কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, উপজেলার চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৩’শ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল পাটের আবাদ হয়েছে। গত বছর পাট চাষের লক্ষমাত্রা ছিল ২ হাজার ১৭৭ হেক্টর। গত বছরের তুলনায় এবার ১২৩ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ বেশি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে উপজেলার যাদুরচর ও রৌমারী সদরসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষকেরা ক্ষেত থেকে পাট কাটা শুরু করেছেন। পানির অভাবে জাগ দিতে না পারায় পাট কেটে ক্ষেতেই গাদি দিয়ে রাখছেন। ফলে রোদে পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। আবার অনেকেই ভেন-ট্রলি ও কাকড়া দিয়ে পাট দুই/তিন কিলোমিটার দূরে নদীতে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে তাদের বাড়তি টাকা খরচ হচ্ছে।
উপজেলার পাটচাষি আবু সাঈদ মিয়া বলেন, আমি এ বছর ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। পানির অপেক্ষায় থেকে পাট কাটা শুরু করেছি। এক বিঘা জমির পাট কেটে বাড়ির পাশে পুকুরে জাগ দিয়েছি। আমার আর জাগ দেওয়ার জায়গা নেই। বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছি। আমার পাট রোদে শুকিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে আমি বিপদের মধ্যে রয়েছি।
কৃষক সফিল হক বলেন, আমি এবার দেড় বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছে। পানি না থাকায় পাট কাটতে পারছি না। বেশি দেরি করে পাট কাটলে জমিতেই নষ্ট হয়ে যাবে। আর ২/১ দিন দেখে পাট কাটা শুরু করবো।
যাদুরচর ইউনিয়নের লাঠিয়ালডাঙ্গা গ্রামের কৃষক ফরমান আলী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন হয়েছে। আগে সঠিক সময়ে বৃষ্টি হতো। পাট কেটে সরাসরি বিলের পানিতে জাগ দেওয়া যেত। গত তিন বছর থেকে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে খুব ঝামেলা হচ্ছে।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, কৃষকদের রেমন রেডিং পদ্ধতিতে পাট জাগ দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিছু বাড়তি ঝামেলার কারনে এই পদ্ধতি কৃষকেরা ব্যবহার করেন না। বর্তমানে পানির জন্য রৌমারী উপজেলার পাট চাষিরা বিপাকের মধ্যে রয়েছেন। এছাড়াও আমরা পরামর্শ দিচ্ছি নদীতে পাট জাগ দেওয়ার জন্য।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।