মাসুদুর রহমান : সাংবাদিক নাদিম হত্যা ঘটনায় থানায় ২২ জনের বিরদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পরিবার। এদিকে শনিবার ভোর ৪টার দিকে পঞ্চগড়ের সীমাস্তবর্তী দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের চরতিস্তাপাড়া বোনের বাড়ী থেকে বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে গ্রেফতার করে র্যাব। তবে চেয়ারম্যান বাবু সহ ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে শনিবার (১৭ জুন) দুপুর ৩ টায় নিশ্চিত করেছেন জামালপুর পুলিশ সুপার নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অন্যদিকে জামালপুর প্রেস ক্লাবের আয়োজনে শনিবার ( ১৭ জুন) দুপুর ১২ টায় সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম-এর হত্যাকারী চেয়ারম্যান বাবু সহ সকল আসামীদের ফাঁসির দাবীতে জেলার কর্মরত সাংবাদিকরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।
সাংবাদিক নাদিম হত্যা: আরও পড়ুন >>
প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজুর রহমান সাদার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানের সঞ্চালনায় জামালপুর প্রেসক্লাবের কাফি পারভেজ, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ জলিল,সাবেক সভাপতি এডভোকেট ইউসুফ আলী, সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন মিন্টু, এসএ টিভির জেলা প্রতিনিধি ফজলে এলাহী মাকাম ,বজলুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন । এ সময় যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি মাহফুজুর রহমান , কালের কন্ঠের মোস্তফা মঞ্জু, জামালপুর মডেল প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান,ঢাকা প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি ফরিদুল ইসলাম , কালবেলার মশিউর রহমান,দৈনিক জনবাণী ও ঢাকার ঢাক পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মাসুদুর রহমান, মানব কন্ঠের সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি জাকারিয়া জাহাঙ্গীর , ড্যালি স্টারের জেলা প্রতিনিধি শহীদুল ইসলাম নীরব , মাদারগন্জের আজকালের খবরের মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ,আজকের পত্রিকার আকন্দ সোহাগ ,মেলান্দহের সিনিয়র সাংবাদিক আজম সহ প্রায় ৩ শতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলো ।
বক্তারা প্রধান অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুসহ হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি এবং অবৈধভাবে উপার্জিত তার সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে বাবুকে অব্যাহতি, সাংবাদিক নিরাপত্তা সুরক্ষা আইন করার দাবি জানান।
জানা যায় , গত বুধবার (১৪ মে) রাত ১০টার দিকে জামালপুরের বকশীগঞ্জের পাটহাটি মোড় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথের সামনে মোটরসাইকেল থামিয়ে কিলঘুষি মারা হয় বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভির উপজেলা প্রতিনিধি নাদিমকে । এ সময় তাকে টেনেহেঁচড়ে রাস্তার অপর প্রান্তে নিয়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায় অপরাধীরা। ঘটনার সময় ওই গলিতে অন্ধকারে আড়ালে দাঁড়িয়েছিলেন চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবু। সেসময় তার ছেলে ফয়সাল, রিফাত, রেজাউল, মনির, সাইদসহ আরও কয়েকজন ছিলেন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে বকশীগন্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাদিমকে জামালপুর হাসপাতালে প্রেরণ করেন । জামালপুর হাসপাতালে নেওয়া হলে অবস্থার অবনতি দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় । পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বিকালে তিনি মারা যান। ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন বাবু। শুক্রবার (১৬ জুন) সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ থেকে বাবুকে বহিষ্কার করা হয় । আরো জানা যায় , সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বাবুর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই হুমকি পাচ্ছিলেন সাংবাদিক নাদিম। তিনিসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন চেয়ারম্যান। যদিও সেই মামলা খারিজ করে দেয় আদালত।
কথা হলে জামালপুর সুপার নাসির উদ্দিন আহমেদ এ প্রতিবেদক মাসুদুর রহমানকে জানান , সাংবাদিক নাদিমের হত্যাকান্ডটি পৈশাচিক এবং নারকীয়। আমরা ঘটনার পরপরই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তিন দিন টানা অভিযান চালিয়ে ১১ জন আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। ইতিমধ্যেই ভিকটিমের স্ত্রী ২২ জনকে আসামি করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে বকশীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছে। আমরা অন্যান্য আসামিদেরও খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ। আমাদের প্রতিটা টিম এখনও নিরলস ভাবে আসামি গ্রেফতার এ কাজ করে যাচ্ছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।