সেবা ডেস্ক : ‘ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও প্রতিহিংসা’ থেকে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে তার ওপর হামলার পরিকল্পনা করেন সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু। সে অনুযায়ী ঘটনার দিন নিজের ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ দিয়ে হামলা চালানো হয়। হামলার সময় ঘটনাস্থলের কাছেই অবস্থান করে নির্দেশনাও দিচ্ছিলেন তিনি।
শনিবার (১৭ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাওরানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
সাংবাদিক নাদিম হত্যা: আরও পড়ুন >>
সাংবাদিক নাদিম খুনের প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু (৫০) এবং তার সহযোগী মনিরুজ্জামান মনির (৩৫), জাকিরুল ইসলাম (৩১) ও রেজাউল করিমকে (২৬) গ্রেফতারের বিষয়ে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এর আগে আজ সকালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে বাবুসহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদিন বিকালে আরেক হামলাকারী রেজাউল করিমকেও বগুড়া থেকে গ্রেফতারের কথা জানায় র্যাব।
সাংবাদিক নাদিমকে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেওয়া রেজাউল
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সাংবাদিক নাদিম সম্প্রতি বাবুর বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে অনলাইন পোর্টালে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাবু ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিক নাদিমকে বিভিন্নভাবে হুমকিসহ তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাও করেন। পরে ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলাটি খারিজ করে দেন। মামলা খারিজের বিষয়টি নিয়ে ভিকটিম নাদিম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ায় বাবু আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।’
তিনি বলেন, ‘পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ জুন (বুধবার) রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ভুক্তভোগী সাংবাদিক নাদিম বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় বাবু তার সন্ত্রাসীদের নিয়ে নির্জন স্থানে ওঁৎ পেতে থাকেন। সাংবাদিক নাদিম তার সহকর্মীসহ মোটরসাইকেল যোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বাবুর সন্ত্রাসীরা তাকে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। পরে পেছন থেকে দৌড়ে আরও কয়েকজন লোক এসে তাকে মারতে মারতে পাশের একটি অন্ধকার গলিতে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যান এবং এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন।’
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ওই সময় প্রধান অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বাবু ঘটনাস্থলের কাছে থেকে পুরো ঘটনার নেতৃত্ব দেন। সাংবাদিক নাদিমের সহকর্মী তাকে বাঁচাতে গেলে বাবুর সন্ত্রাসীরা তাকেও মারধর করে। একপর্যায়ে ভিকটিম নাদিমের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে বাবু ও তার সন্ত্রাসী গ্রুপ দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরের দিন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিক নাদিম মারা যান।’
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।