নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রামে মুরাদপুর বান্দিরপুকুর দাখিল মাদ্রাসায় দুই পদে নিয়োগ বাণিজ্যের ১০লাখ টাকা ভাগাভাগির অভিযোগ উঠেছে।
মাদ্রাসার গভর্নিং কমিটির সভাপতি ও যুবলীগ নেতা নিজেই টাকা ভাগাভাগির কথা স্বীকার করেছেন। তার স্বীকারোক্তির একটি ভিডিও গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে সভাপতি বলেন, দুই পদে নিয়োগের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা নিয়েছেন চার লাখ টাকা, কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য একলাখ, মাদ্রাসার সুপার ৫০হাজার আর তিনি নিয়েছেন একলাখ টাকা। মাছ ঘাটার জন্য দুইলাখ এবং অবশিষ্ট টাকা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের জন্য রেখেছেন। উপজেলা
আওয়ামী লীগের সভাপতি, দপ্তর সম্পাদক, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্যসহ অনেকের নাম ভাঙিয়ে টাকা ভাগাভাগির হিসাব দিয়ে মাদ্রাসার সভাপতি বলেছেন, গোপনে করিনি, প্রকাশ্যে বলেছি কে কে চাকরি নেবে আসো। সহ-সুপার পদে নিয়োগ হবে, ১০লাখ টাকার মধ্যে দুইলাখ কম দেন। আয়া ও ল্যাব কম্পিউটার সহকারি দুই পদে নিয়োগের জন্য ১০লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। তার ফুফু শাশুড়ির মেয়েকেও নিয়োগ দিয়েছেন। উপজেলার ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের মুরাদপুর বান্দিরপুকুর দাখিল মাদ্রাসার গভর্নিং কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন এসব কথা বলার সময় একজন গোপনে ভিডিও ধারণ করেন।
প্রাপ্ততথ্যে জানা গেছে, মুরাদপুর বান্দিরপুকুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার ও সভাপতি নিয়মবহির্ভূত, নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্প্রতি শেরপুর উপজেলার একটি প্রতিষ্ঠানে গোপনে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে এনিয়ে স্থানীয়দের মৌখিক অভিযোগের কারণে ওই মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষার নাটক সাজানো হয় এবং সেখানেই নিয়োগ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে। সম্প্রতি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গণমাধ্যম কর্মীদের বলেছিলেন, শেরপুর উপজেলার একটি প্রতিষ্ঠানে নন্দীগ্রাম উপজেলার ওই মাদ্রাসার নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলো। পরে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়। এরমধ্যেই বৃহস্পতিবার জানা গেল, দুই পদে নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে।
বান্দিরপুকুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার সাইফুল ইসলাম ও গভর্নিং কমিটির সভাপতি যুবলীগ নেতা ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসা ছাড়া অন্য কোথাও নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া যাবে না, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের এ নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হয়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদৎ হোসেন গণমাধ্যমে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন। মুরাদপুর বান্দিরপুকুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার সাইফুল ইসলাম দাবি করেন, নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি। তবে মাদ্রাসার গভর্নিং কমিটির সভাপতি ফারুক হোসেনের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বগুড়া জেলা শিক্ষা অফিসার মো. হযরত আলী বলেন, তিনি ওই মাদ্রাসার কেউ নন। নিয়োগের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ডিজির প্রতিনিধি নিয়োগ করে এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সদস্য থাকেন।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগের পরিদর্শক মো. শহীদ লতীফ বলেন, নিয়োগ বাণিজ্য ও অনিয়মের অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।