আবদুল জলিল, কাজিপুর(সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ছিলো অসামান্য ভূমিকা। বিশেষ করে একটি সম্মুখযুদ্ধে পাকবাহিনী ব্যাপক ক্ষতি করে অবশেষে পিছু হটে। এতে অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহিদ হন।
এবার সরকারিভাবে সেই শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়নের কাজ করছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক অনুসন্ধান করে মোট ১১ জন শহিদ মুুক্তিযোদ্ধার একটি তালিক তৈরি করে। এরমধ্যে থেকে আটজন শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধিস্থল খুঁজে পাওয়া যায়নি। খুুঁজে পাওয়া তিনজন শহিদ মুক্তিযোদ্ধার সমাধিস্থল উন্নয়ন ও সংরক্ষণের জন্যে প্রথম পর্যায়ে কাজ শুরু হচ্ছে। কাজিপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়সূত্রে জানা গেছে, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন (১ম পর্যায়)শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কাজের স্থান ইতোমধ্যে চিহ্নিত হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে উপজেলার ও ইউনিয়নসমূহের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কামান্ডার, ইউনিয়ন কমান্ডার, ডেপুটি কমান্ডার ও ইউনিয়নের প্রবীণ ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে মোট ১১ জন শহিদ মুক্তিযোদ্ধার একটি তালিকা তৈরি করা হয়। পরে যাচাই বাছাই ও সমাধিস্থলের অবস্থান সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে উপজেলা কমান্ড তিনজন শহিদ মুক্তিযোদ্ধার অবস্থান নিশ্চিত করে। এঁরা হলেন উপজেলা তারাকান্দি গ্রামের মৃত বিষ্ণু রবিদাসের পুত্র শহিদ রবিলাল দাস (বেসামরিক গেজেট নং-২৬৫৭)। তাঁর সমাধিস্থল গান্ধাইল গ্রামের খামারপাড়ায়। এছাড়া মাথাইলচাপড় গ্রামের মৃত দেলবর হোসেন মন্ডলের পুত্র শহিদ সুজাবত আলী (বেসামরিক গেজেট নং-২৬৫৮) ও কাচিহারা গ্রামের মৃত অছিম উদ্দি শেখ এর পুত্র শহিদ আব্দুস সামাদ(বেসামরিক গেজেট নং-২৬৬৫) । এঁদের শেষোক্ত দুজনের সমাধিস্থল নিজ গ্রামে।
অবশিষ্ট ৮ জন শহিদ মুক্তিযোদ্ধার সমাধির কোন চিহ্ন এখন আর অবশিষ্ট নেই। এঁরা হলেন উপজেলার মিরারপাড়া গ্রামের শহিদ সোহরাব আলী ও শহিদ সোলেমান আকন্দ, পশ্চিম খুকশিয়া গ্রামের শহিদ শাহজালাল প্রামাণিক, পূর্ব খুকশিয়া গ্রামের শহিদ আজিজুল হক খান ও জোরবাড়ি গ্রামের দেলশাদ আলী। এঁরা সবাই যুদ্ধে যাবার পর আর ফিরে আসেননি। এছাড়া মাইজবাড়ী গ্রামের শহিদ মফিজ উদ্দিন মহির, চর আদিত্যপুর গ্রামের শহিদ আব্দুর রাজ্জাক এবং চরকাজিপুর গ্রামের শহিদ চান মিয়ার সমাধিস্থল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুখময় সরকার জানান, ঠিকাদার কাজের জন্যে এসেছে। আমরা তাদের সমাধিস্থল বুঝে দিয়েছি। শিঘ্রই কাজ শুরু হচ্ছে।
কাজিপুর উপজেলার সাবেক কমান্ডার গাজী ইউনুস উদ্দিন জানান, বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে সম্ভব সবকিছু করছেন। সহযোদ্ধাদের সমাধিস্থল পাকা হচ্ছে শুনে ভালো লাগছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এসব দেখে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।