মাসুদুর রহমান : জামালপুর জেলা কারাগারের পুরাতন স্থাপনা অপসারণের দরপত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে । শনিবার (২৭ মে) দুপুর পর্যন্ত বিষয়টি শহরের বিভিন্ন জায়গায় আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
মেসার্স অর্নব এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স ফেরদৌস এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স সোলায়মান ভাঙ্গারী নামের তিন প্রতিষ্ঠান গত ২৫ মে (বৃহস্পতিবার) জামালপুর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করে জামালপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, জামালপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জামালপুর পৌর মেয়র,জামালপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার, জামালপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি /সাধারণ সম্পাদককে অনুলিপি প্রদান করা হয়।অনিয়মের সাথে গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী সরাসরি জড়িত বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায় , জামালপুর জেলা কারাগারের ৩৯টি পুরাতন স্থাপনা ভেঙে নেওয়ার দরপত্র আহ্বান করে গণপূর্ত। গত ২৪ মে জামালপুর গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে দরপত্র দাখিলের নির্ধারিত দিন ছিল। এইদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দরপত্র নির্ধারিত বাক্সে দাখিলের সময় নির্ধারন ছিল। একইদিন দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে উপস্থিত সকল ঠিকাদারের সামনে দরপত্রের বাক্স উন্মুক্ত করার কথা থাকলেও দরপত্র বাক্স উন্মুক্ত করা হয় দুপুর ১ টায়। এর আগে ঠিকাদারদের দ্বিতীয়তলায় নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ঠিকাদারদের ভেতরে ডাকা হলে তারা দরপত্র বাক্স সিলগালা বিহীন দেখতে পান। দরপত্র বাক্স সিলগালা বিহীন থাকার বিষয় রহস্যজনক বলে মনে করেন দরপত্রে অংশ নেওয়া ঠিকাদারগণ।
দরপত্রের শর্তাদি সম্পর্কে উপস্থিত ঠিকাদারগন জানতে চাইলেও নির্বাহী প্রকৌশলী তাদের বলেন, শর্তাদি তেমন কোন বিষয় না এবং সে এও প্রকাশ করে যে সর্বোচ্চ দরদাতা বাংলাদেশের নাগরিক হলেই চলবে, অন্য কিছুর প্রয়োজন নেই। অভিযোগকারী ঠিকাদাররা মনে করেন নির্বাহী প্রকৌশলী তার পূর্ব পরিকল্পিত পছন্দনীয় দরদাতাকে কাজটি পাইয়ে দেওয়ার স্বার্থে অনিয়ম করেছেন। যার কারনে নির্দিষ্ট সময়ে টেন্ডার বাক্সটি উন্মুক্ত না করে ঠিকাদারদের বের করে দিয়ে ৩০ মিনিট সময় কালক্ষেপন করে সিলগালা বিহীন অবস্থায় উন্মুক্ত করেন। যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও দরপত্রের শর্তাবলির চরম লঙ্ঘন। গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলীর অনিয়মের ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি অভিযোগকারীদের।
এদিকে সিলগালা বিহীন দরপত্র বাক্স খোলা ও সময় ক্ষেপনের অভিযোগ পাবার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে জামালপুর জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার এমাদুল হোসেন বিষয়টি বৃহস্পতিবার লিখিত ভাবে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জামালপুর গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মোবারক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন,অন্যায়ভাবে কোন কিছু করা হয়নি, ন্যায্যভাবেই দরপত্র গ্রহন ও খোলা হয়েছে।
জামালপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান জানান, অভিযোগের একটা অনুলিপি পেয়েছি।
কথা হলে জামালপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ ২৭ মে শনিবার সকালে মুঠোফোনে জানান,অফিসিয়ালভাবে আমি এখনো অবগত না। তবে অভিযোগের প্রেক্ষিতে দরপত্রে কোন ধরনের অনিয়ম হলে একজন নাগরিক হিসেবে তিনিও তদন্তের দাবী জানান।
তবে জামালপুর জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায় শনিবার দুপুরে এ প্রতিবেদক মাসুদুর রহমানকে বলেন, ওনারা অভিযোগ দিয়েছে আপনারা পত্রিকায় তুলে দিয়েছেন। এতো টুকুই দেখেছি। কি অভিযোগ দিয়েছে এগুলা দেখতে হবে তো। আমি অভিযোগটি পত্রিকায় পড়েছি। কার্যালয়ে যে অভিযোগ দাখিল হয়েছে আমি এখনো অভিযোগ পড়ি নাই।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।