সেবা ডেস্ক : চাঞ্চল্যকর ০৪ বছরের শিশু অপহরণ ও মুক্তিপণ মামলায় ১২ বছর আত্মগোপনে থাকা ১৪ বছর সাজা এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক শিশু অপহরণের পরিকল্পনাকারীকে শেরপুর জেলার নকলা থানাধীন চকপাড়া এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪।
র্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ভিকটিম আকলিমা খাতুন (০৪) একজন গ্রামের হতদরিদ্র ঘরের নাবালিকা সন্তান। আসামী মোঃ হোসেন আলী (৪২), পিতা- মোঃ আজম আলী, সাং-পাচঁকাহনিয়া, থানা-নকলা, জেলা-শেরপুর। আসামী ভিকটিমের বাবার মামাতো বোনের স্বামী। আসামী মোঃ হোসেন আলী (৩০) দুই বিবাহ করেন। সেই সুবাদে আসামী মোঃ হোসেন আলী (৪২) ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী মোঃ তাসলিমা খাতুন(২৫), স্বামী- মোঃ হোসেন আলী, সাং-পাচঁকাহনিয়া, থানা-নকলা, জেলা-শেরপুর প্রায়ই ভিকটিমের বাড়ীতে আসা যাওয়া করতো। গত ১০/১০/২০১১ ইং তারিখে আসামী মোঃ হোসেন আলী (৪২) এর দ্বিতীয় স্ত্রী ভিকটিমের বাড়ীতে আসে এবং ভিকটিমকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ভিকটিমের শিশু সুলভ আচরণ ও সরল বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে ভাল পোশাক পড়াবে, দোকান হতে চকলেট কিনে দিবে ও ভাল খাবার খাওয়াবে বলে বাজারে নিয়ে যায় এবং অত্যান্ত সু-পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমকে অপহরন করে ঢাকায় নিয়ে যান। অতঃপর ৫/৬ ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ায় ভিকটিমকে অনেক খোজাখুজি করে তার কোন খোঁজ না পেয়ে আসামী মোঃ হোসেন আলী (৪২)’কে বাদী ফোন করলে সে জানায় যে, তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সহিত ভিকটিম ঢাকায় চলে আসছে। আসামী মোঃ হোসেন আলী (৪২) ভিকটিমকে ফেরত নিতে চাইলে এক লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে এবং ভিকটিমকে নিতে কাচঁপুুর ব্রিজের নিচে আসতে বলে অন্যথায় ভিকটিমকে বিদেশে পাচার করে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবা মোঃ আব্দুল জলিল (৪২), পিতা-লেসু মিয়া, সাং- শালখা, থানা- নকলা, জেলা- শেরপুর বাদী হয়ে নকলা থানায় অভিযোগ দাখিল করলে অফিসার-ইন-চার্জ, নকলা থানার মামলা নং-০১, তারিখঃ ০১/১১/২০১১ ইং, ধারা-৭/৮ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন/২০০০ সংশোধনী/০৩) রুজু করেন। মামলার তদন্তকারী অফিসার মামলা সুষ্ঠু তদন্ত শেষে আসামীর বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৮ ধারায় বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। জনাব মোঃ আখতারুজ্জামান, বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, শেরপুর মহোদয় গত ১৪/১২/২০২০ খ্রিস্টাব্দে আসামী মোঃ হোসেন আলী (৪২) এর বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমান হওয়ায় আসামীকে ১৪ (চৌদ্দ) বৎসরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১০,০০০/- টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ০৬ (ছয়) মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৮ ধারায় অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমান হওয়ায় আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ২০,০০০/- টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ০১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। মামলার ঘটনার পর থেকেই আসামী মোঃ হোসেন আলী ১২ বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিল। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তিনি গাজীপুর সালনা এলাকায় গার্মেন্টসে এবং সিএনজি চালক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। র্যাব-১৪ সিপিসি-১ জামালপুর ক্যাম্পের আভিযানিক দল জানতে পারে যে আসামি ঈদ উদযাপনের জন্য ছদ্মবেশ ধারণ করে নিজ এলাকায় অবস্থান করছে। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে আসামির অবস্থান সনাক্ত করে কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান এর নেতৃত্বে র্যাবের একটি অভিযানিক দল ইং ২৩/০৪/২০২৩ ইং তারিখ অনুমান ০৪:০৫ ঘটিকায় শেরপুর জেলার নকলা থানাধীন চকপাড়া এলাকা হতে আসামী মোঃ হোসেন আলী (৪২)’কে তার এক আত্মীয়ের বাসা হতে আটক করে। ধৃত আসামীকে সূত্রোক্ত মামলায় শেরপুর জেলায় নকলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ধরণের অপরাধের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন র্যব-১৪ জামালপুর।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।