নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রামে মনিনাগ এলাকায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে দাদীর কবর জিয়ারত করতে গিয়ে রবিউল ইসলাম (২২) নামের এক যুবক খুন হয়েছেন।
অন্যদিকে পারশুন এলাকায় ঈদের পরদিন জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলা ও হাসুয়ার কোপে গুরুতর আহত ফজলুল হক (৫০) নামের একজনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই ঘটনায় নারীসহ আরও দুইজন আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, গত শনিবার ঈদের দিন সকাল ৯টার দিকে উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের মনিনাগ পূর্বপাড়া এলাকায় চাচাতো ভাই-ভাবিদের মারপিটে গুরুতর আহত রবিউল ইসলাম হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যায়। সে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও মনিনাগ পূর্বপাড়ার আকরাম হোসেনের ছেলে।
নন্দীগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) চান মিয়া স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, সকালে ঈদের নামাজ আদায় শেষে এইচএসসি পরীক্ষার্থী রবিউল তাদের বাড়ির পাশে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাদীর কবর জিয়ারত করতে গিয়ে কবরের ওপর এবং আশপাশে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখে। চাচাতো ভাইয়ের ঘরের ময়লা আবর্জনা প্রতিদিন কবরের আশপাশে ফেলার ব্যাপারে সে প্রতিবাদ করে। এসময় তার সঙ্গে চাচাতো ভাই ও ভাবিদের কথাকাটাকাটির ঘটনা ঘটে। কিছুক্ষন পর রবিউল তার ঘরের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। এমন সময় পেছন দিক থেকে চাচাতো ভাই ও ভাবিসহ ৪-৫জন বাঁশের লাঠি দিয়ে রবিউলকে মারপিট করে। যুবকের মাথা ফেটে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে রক্তাক্ত গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডেকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চিকিৎসাধিন অবস্থায় সে মারা যায়।
অপরদিকে ঈদের পরদিন গত রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার থালতা-মাঝগ্রাম ইউনিয়নের পারশুন উত্তরপাড়া এলাকায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে কথিত হেলমেট বাহিনীর হামলায় ও হাসুয়ার কোপে আহত নারীসহ তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ফজলুল হক (৫০) নামের একজনের অবস্থা আশংকাজনক। তার স্ত্রী নাজিরা বেগম (৪৫) এবং প্রতিপক্ষের সোহায়েব হোসেন (২০) হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, পারশুন গ্রামের ফজলুল হকের সঙ্গে আইয়ুব আলীর দীর্ঘদিন জমিজমা সংক্রান্তে বিরোধ চলছিল। বিষয়টি সমাধানের জন্য ফজলুল ঈদের পরদিন গ্রামের লোকজনকে ডাকতে যান। গ্রামের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পূর্বেই প্রতিপক্ষ আইয়ুব, তার ভাই আলী হোসেন, খায়রুল, মোহাম্মদ এবং ভাতিজা সোহায়েব সহ ৮/১০ জন মাথায় হেলমেট পড়ে হাসুয়া হাতে নিয়ে ফজলুল হকের ওপর হামলা করে। এসময় স্বামীকে বাঁচাতে স্ত্রী নাজিরা বেগম এগিয়ে গেলে তাকেও মারপিট করা হয়। হাসুয়ার কোপে ফজলুল হক গুরুতর আহত হন। মারপিটের সময় প্রতিপক্ষের সোহায়েব হোসেনও আহত হয়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে থালতা-মাঝগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন জানান, জমিজমা সংক্রান্তে তাদের দীর্ঘদিনের বিরোধ। বিষয়টি সমাধানের জন্য ঘটনার দিন গ্রামের লোকজনকে ডেকে বসার কথা ছিল। এরআগেই মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
এ ব্যাপারে নন্দীগ্রাম কুমিড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মুস্তাফিজুর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।