সেবা ডেস্ক : জাপানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের নতুন দরজা খুলে দেবে বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার। তিনি বলেন, জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম সহযোগী দেশ।
বাংলাদেশের আঞ্চলিক যোগাযোগ সম্প্রসারণ, অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, মেট্রোরেল এবং মহেশখালী-মাতারবাড়ী প্রভৃতি মেগা প্রকল্পে জাপান এরই মধ্যে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছে। এ ছাড়াও দেশের বেসরকারি খাত এবং মানব সম্পদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ইমেজ বৃদ্ধিতেও জাপান ক্রমাগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানান তিনি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিবেচনায় বাংলাদেশের জন্য জাপান ১১তম বৃহত্তম রফতানি গন্তব্য ও সপ্তম বৃহত্তম আমদানির উৎস এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অন্যদিকে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের বিবেচনায় জাপান ১২তম অবস্থানে রয়েছে এবং এরই মধ্যে জাপানের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে ৪৫৭ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করেছে।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, জাপানি বিনিয়োগকারীদের ক্রমাগত বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের মনোভাবই দুদেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে আরও সুদৃঢ় করবে। বিগত ৫০ বছর ধরে দুদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ভিত্তি বর্তমানে একটি স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপে পরিণত হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান জাপান সফর সে সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে।
তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এ জাপান সফরে কৃষি, কাস্টমস, প্রতিরক্ষা, আইসিটি ও সাইবার সিকিউরিটি, শিল্পায়ন, মেধাস্বত্ব এবং মেট্রেরোল প্রভৃতি ক্ষেত্রে স্বাক্ষরিত দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারকগুলো এরই বহিঃপ্রকাশ।
ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সাত্তার আরও মনে করেন, দুই দেশের চমৎকার বাণিজ্য সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে আরও জাপানি উদ্যোক্তা ইনোভেশন, তথ্য-প্রযুক্তি বিনিময়, পণ্য বহুমুখীকরণ প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে এবং বাংলাদেশের বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠী তাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মনোভাবকে আরও বেগবান করবে।
জাপানের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, জাহাজ নির্মাণ, ইলেকট্রনিকস, পাট, জ্বালানি, অটোমোবাইল, হালকা-প্রকৌশল, তথ্য-প্রযুক্তি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, শিল্প খাতে মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রভৃতি খাতে জাপানের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে বলে মনে করেন ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সাত্তার।
জেট্রো কর্তৃক পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে যেসব জাপানি কোম্পানি তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে, এর মধ্যে ৬৮ শতাংশ কোম্পানি তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে আগ্রহী। জাপান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং অনেক দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এ দেশে জাপানি বিনিয়োগ আনয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
জাপান বাংলাদেশের কৌশলগত অংশীদারত্ব আগামীতে দুই দেশের মধ্যে ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (ইপিএ) স্বাক্ষর ত্বরান্বিত করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন, যা কি না এলডিসিকে উত্তরণের পর জাপানের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা হারানোর বিকল্প হিসেবে কাজ করবে। তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জে জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল সম্ভাবনাময় জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি মাইলস্টোন উদ্যোগ বলা যায়।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।