রোজা রাখার জন্য সাহরি খাওয়ার গুরুত্ব ও বিধান

S M Ashraful Azom
0

: আল্লাহ তাআলা মানব ও জিন জাতি সৃষ্টির উদ্দেশ্য হলো উভয় জাতি যেন তাঁরই ইবাদত বন্দেগী করে। তাই ইসলাম দৈহিক/ শারিরীক ও আর্থিক উভয় ইবাদত কে গুরুত্ব দিয়েছে। আর রোযা একটি শারীরিক ইবাদত। এই ইবাদতের মাধ্যমে বান্দাগণ তাঁর রবের সানিধ্য লাভ করে। রব তা'আলার হুকুমের সামনে নিজকে সোপর্দ করে বান্দার তার আনুগত্য প্রকাশ করে। 

রোজা রাখার জন্য সাহরি খাওয়ার গুরুত্ব ও বিধান



 নিজের মধ্যে বসবাস করা রিপু গুলোকে বিনাশ করে রোযা বা উপবাস থাকা ।  আর রোযা পালনের জন্য সাহরি খাওয়ার মাধ্যমে উপবাস থাকতে হয়। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় পবিত্র মাহে রমজানে রোযাদার ব্যক্তি সূর্যাস্তের পর রোযা ভঙ্গ করার উদ্দেশ্যে যে খাবার বা পানীয় গ্রহণ করে তাকে ইফতার বলে এবং শেষ রাতে সুবহে সাদিকের পূর্বে পবিত্র রোযা পালনের নিয়তে যা খায় তাকে সেহেরী বলে।

রোযাদারের জন্য সাহরি খাওয়া ও ইফতার করার মধ্যে অনেক ফজিলত ও বরকত রয়েছে। বিশেষ করে ফোকাহায়ে কেরামের দৃষ্টিতে সাহরি খাওয়া ও ইফতার করা সুন্নাত।

এ প্রসঙ্গে হাদিসে পাকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “তোমরা সেহেরী খাও, কেননা সেহেরী খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফ)

উক্ত হাদিসে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামা শেষ রাতে সকল রোযাদারকে সেহেরী খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কেননা সেহেরীর মধ্যে অনেক কল্যাণ ও বরকত নিহিত রয়েছে। এখানে বরকত বলার অনেক উদ্দেশ্য আছে যেমন সেহেরী খেয়ে পরদিনের রোযায় শক্তি সঞ্চয় করা। অথবা সেহেরী খাওয়ার উদ্দেশ্য হলো 'নবী-রাসূলদের সুন্নাত পালনের মাধ্যমে নিজেদের জন্য সাওয়াব বৃদ্ধি করা। কেননা সেহেরী খাওযা পূর্ববর্তী নবী রাসূলগণের সুন্নাত। আর আল্লাহর প্রিয় নবী রাসূলগণের অনুসরনের মধ্যে অনেক কল্যাণ রয়েছে।


প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আমর ইবনুল আস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমাদের রোযা ও আহলে কিতাবদের (ইয়াহুদি-খ্রিস্টান) রোযার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহেরী খাওয়া। [ সহীহ মুসলিম শরীফ ] অর্থাৎ আমরা রোযার উদ্দেশ্যে শেষ রাত্রে ও সুবহে সাদিকের পূর্বে সেহেরী গ্রহণ করি আর তারা সেহেরী খায় না।

আলোচ্য হাদিস সমূহ পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় যে, রোযা পালনে সেহেরী খাওয়ার গুরুত্ব অত্যধিক এবং তা অতি বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ। প্রিয়নবী রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম খেজুরকে মুমিনদের জন্য অতি উত্তম সেহেরী বলে ঘোষণা করেছেন । [ আবু দাউদ শরিফ ]

অর্থাৎ যারা সেহেরী গ্রহণের জন্য কোন খাদ্য দ্রব্য যদি না পায় কমপক্ষে খেজুর খেয়ে যেন সেহেরীর সুন্নাত ও ফজিলত গ্রহণ করে। তবে কোন রোযাদার যদি শেষ রাত্রে সেহেরী গ্রহণের সুযোগ না পায় এবং রোযার নিয়তে পরদিন রোযা পালন করে তার রোযা আদায় হয়ে যাবে। তবে অবহেলা বা ইচ্ছাকৃতভাবে যেন কোন রোযাদার সেহেরীর বরকত হতে বঞ্চিত না হয় সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। [মেশকাত শরীফ, মেরকাত শরীফ, সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফ ইত্যাদি|

মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের সাহরি ও ইফতার কবুল করুন এবং রোযা পালনের মাধ্যমে তাঁর সানিধ্য লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন বেহুরমতে সায়িদিল মুরসালিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। 




লেখক,
মুদাররিস - জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মহিলা ফাযিল মাদরাসা, ষোলশহর , চট্টগ্রাম।
খতিব- মসজিদ-এ রহমানিয়া গাউসিয়া, অক্সিজেন, বায়েজিদ, চট্টগ্রাম।

শেয়ার করুন

সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top