নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : দুই বৃদ্ধা মহিলাসহ এক যুবক বস্তা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। পাশেই ছিল কালো একটি মাইক্রোবাস। সেই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলো স্কুলছাত্র মাহফুজ রায়হান (১৪)। তাকে কাছে ডেকে নেয় দুই বৃদ্ধার সঙ্গে থাকা অচেনা যুবক।
বস্তাটি মাইক্রোবাসে তুলে দেওয়ার জন্য তারা স্কুলছাত্রের সহযোগিতা চায়। তাদের কথামতো মাইক্রোবাসে বস্তা তুলে দেওয়ার পরপরই অচেতন হয়ে যায় রায়হান। এরপর থেকেই সে নিখোঁজ ছিল। ওই শিক্ষার্থী চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানার মুন্সি শাহপাড়ার আহসান হাবীবের ছেলে। তারা রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার নগর ভবন দরিখরবনা এলাকায় বসবাস করে এবং একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে রায়হান।
গত সোমবার সকালে বোয়ালিয়া থানার পশু হাসপাতাল এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে নন্দীগ্রাম ও সিংড়া উপজেলা সীমান্তবর্তী বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের পাশে অচেতন অবস্থায় পড়েছিলো ওই স্কুলছাত্র। স্থানীয়রা খবর দিলে বগুড়া রিজিয়নের কুন্দারহাট হাইওয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। সোমবার দিবাগত রাত দেড়টায় নিখোঁজ সন্তানকে তাঁর বাবার কাছে হস্তান্তর করেন হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম। নিখোঁজ ছেলেকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত ছিলেন বাবা। এসময় নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম দয়া, সাংবাদিক রাসেল মাহমুদ, হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক নিপেন্দ্র নাথ ঘোষ, সহকারি উপ-পরিদর্শক শরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
উদ্ধার হওয়ার পর স্কুলছাত্র রায়হান জানায়, সোমবার সকালে সে বাসা থেকে বের হয়। স্কুলের ভর্তি ফি জমা দিয়ে বাসায় ফিরছিলো। রাজশাহীর বোয়ালিয়ার পশু হাসপাতালের পেছনে দুইজন বৃদ্ধ মহিলাসহ এক যুবক তাকে মাইক্রোবাসে বস্তা তুলে দিতে বলে। তাদের কথামতো বস্তা তুলে দেওয়ার পরই স্কুলছাত্র অচেতন হয়ে যায়। সন্ধ্যায় জ্ঞান ফিরলে সে দেখতে পায় মহাসড়কের পাশে পড়ে আছে।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, নন্দীগ্রাম ও সিংড়া উপজেলা সীমান্তবর্তী বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের পাশে সন্ধ্যায় এলোমেলোভাবে ঘোরাফেরা করছিলো ওই স্কুলছাত্র। স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে তাকে নাম ঠিকানা জিজ্ঞেস করলে সে স্বাভাবিক উত্তর দিতে পারেনি। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে উদ্ধার করে কুন্দারহাট হাইওয়ে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। কিছু সময় পর সে স্বাভাবিক হলে তার বাসার মোবাইল নম্বর বলে। তাৎক্ষনিক তার পরিবারের সাথে হাইওয়ে পুলিশ যোগাযোগ করে।
উদ্ধার হওয়া স্কুলছাত্রের বাবা আহসান হাবীব জানান, তার ছেলে সোমবার সকাল থেকে হঠাৎই নিখোঁজ হয়। মোবাইল বিষয়ে ছেলেকে মাঝেমধ্যে শাসন করতেন, ভেবেছিলেন অভিমান করে কোনো আত্মীয়র বাসায় গেছে। কিন্তু খোঁজ করে কোথাও তাঁর সন্ধান পাননি। রাতে কুন্দারহাট হাইওয়ে পুলিশ মোবাইলে কল করে জানায় সে তাদের হেফাজতে আছে। হাইওয়ে থানায় গিয়ে ছেলেকে সনাক্ত করেন। নিখোঁজ সন্তানকে ফিরে পেয়ে হাইওয়ে পুলিশকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।