নিজস্ব প্রতিবেদক : আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিরব প্রতিবাদ জানালো বাংলাদেশ পুরুষ অধিকার ফাউন্ডেশন (বিএমআরএফ)। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) দিবসটি উপলক্ষে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার কথা থাকলেও রাজনৈতিক অশান্ত পরিস্থিতিতে সংগঠনটি বিভাগীয় শহর রংপুরে মানবাধিকার দিবস পালন করে।
পুরুষ অধিকার মুখপাত্র সাংবাদিক নজরুল ইসলাম দয়া বলেন, অশান্ত ঢাকায় মানবাধিকার দিবস পালনে শঙ্কা ছিল। পুরুষ অধিকার নেতারা সারাদেশ থেকে ঢাকায় গিয়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করে। বর্তমান রাজনৈতিক অশান্ত পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকায় বিভাগীয় শহরে কর্মসূচি পালন করতে হলো। এটা নিরব প্রতিবাদ।
তিনি বলেন, রাস্তায় কেন সমাবেশ করতে হবে! রাস্তা বন্ধ রেখে কি সরকার গঠন করা যায়? সাধারণ মানুষের ক্ষতি হবে, মানবাধিকার লঙ্ঘন হবে! এমন রাজনীতি করবেন না প্লিজ।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে রংপুর প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে নারী নির্যাতন, যৌতুক আইনের সংশোধন এবং পুরুষ বিষয়ক মন্ত্রনালয়সহ ২১ দফা দাবি তুলে ধরেন পুরুষ অধিকার ফাউন্ডেশনের মহাসচিব ফররুখ শাহজাদ শুভ।
এসময় সংগঠনের নেতা মোখলেছুর রহমান মুকুল, আল-হারুন বাপ্পি, রাসেল মাহমুদ, সাখাওয়ার হোসেন সোহাগ, জাহিদ আলম প্রদীপ, সোহেল সারোয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
২১ দফা দাবিগুলো হলো-
১. পুরুষ নির্যাতন দমন আইন চাই।
২. নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং যৌতুক আইনের সংশোধন চাই।
৩. নারী নির্যাতন ও যৌতুক মামলা বিশেষ ট্রাইবুনালে দ্রুত শেষ করার ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ এই সময়কাল উভয়ের যৌবনের মূল্যবান সময়।
৪. নারী নির্যাতন ও যৌতুক মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হলে মামলার বাদীকে একটি জীবন নষ্ট করার দায়ে কঠিন শাস্তির আদেশসহ পর্যাপ্ত জরিমানা নির্ধারণ করার ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. বিনা অপরাধে জেল খাটালে বাদীকে জরিমানা সহ উপযুক্ত শাস্তি বিধানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. সুষ্ঠ তদন্ত ছাড়া কারোও বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা যাবে না।
৭. প্রত্যেককেই তার কৃতকর্মের জন্য যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. সুষ্ঠ তদন্ত ছাড়া শাশুড়ি, ননদ, শ্বশুর, দেবরকে আসামী করা যাবে না।
৯. স্বামীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করলে তদন্ত সাপেক্ষে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।
১০. সন্তান হওয়ার পর স্ত্রী সেচ্ছায় সন্তান ছেড়ে অন্যের কাছে চলে গেলে সন্তানকে স্বামীর হেফাজতে দিতে হবে।
১১. ভ্রুণ হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
১২. নবজাতককে ডস্টবিনে ফেলে দিলে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে এবং স্বামী স্ত্রী ঝগড়া করে শিশুকে শারীরিক নির্যাতন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
১৩. স্ত্রী স্বেচ্ছায় স্বামীকে তালাক দিলে সেক্ষেত্রে স্বামীর যদি কোন দোষ না থাকে তাহলে স্ত্রীর কাছ থেকে জরিমানা স্বরুপ স্বামীকে দেনমোহরের সম পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
১৪. স্ত্রী যদি স্বামীকে তার বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে ত্যাগ করিতে বাধ্য করায়, এমতাবস্থায় স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাক দেয়, সেইক্ষেত্রে স্বামীকে যাতে দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করতে না হয়, তার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হতে হবে।
১৫. স্ত্রী সেচ্ছায় শ্বশুর বাড়ি ছাড়লে সেক্ষেত্রে খোরপোষের দাবি করতে পারবে না।
১৬. দেনমোহর কনের শিক্ষাগত যোগ্যতা, রুপ, গুণ, আর্থিক ও সামাজিক অবস্থান এবং পাত্রের সামর্থ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নির্ধারণ করতে হবে।
১৭. তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার পর দেনমোহর ও খোরপোষের মামলা ছাড়া অন্য কোন মামলা দিয়ে স্বামীকে যেন হয়রানী করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
১৮. পুরুষ বিষয়ক মন্ত্রনালয় গঠন করতে হবে।
১৯. স্ত্রী নিজ পিত্রালয়ে অবস্থানকালিন কোন দুর্ঘটনা ঘটলে বা আত্মহত্যা করলে সুনির্দিষ্ট প্রমান ছাড়া মিথ্যা মামলা দিয়ে স্বামীকে যেন কোন প্রকারের হয়রানী করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
২০. নারী কর্তৃক যদি কোন পুরুষ যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়, তাহলে ওই নারীর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের মামলা করতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে।
২১. আইনের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বিবেচনা করা যাবে না। নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।