নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : মহান বিজয় দিবসে জুতা পায়ে শহীদ বেদিতে উঠে ফটোসেশন করেছেন প্রধান শিক্ষিকা। এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই ক্ষোভ ও ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
বগুড়ার নন্দীগ্রাম পৌরসভার নামুইট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের বেদিতে জুতা পায়ে উঠে প্রধান শিক্ষিকা শাহানারা মিরা ফুলের সাথে ছবি তোলেন। তার এমন কান্ডের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষানূরাগী ও সাধারণ মানুষ। নামুইট গ্রামের স্থানীয় জনতার মাঝেও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, শুক্রবার ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে পুষ্পমাল্য অর্পন করেন নামুইট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। সকাল ১০টার দিকে প্রধান শিক্ষিকা শাহানারা মিরা জুতা পায়ে শহীদ বেদিতে উঠেন এবং নিজের হাতে থাকা মোবাইল ফোনে সেলফি তোলেন। তবে তার সঙ্গে থাকা দুই শিক্ষার্থীর পায়ে জুতা ছিল না।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বলেন, শহীদ বেদিতে জুতা পায়ে উঠে একজন শিক্ষকের এমন কান্ড অত্যন্ত লজ্জার এবং দুঃখজনক। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অসম্মান করা হয়েছে। এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
কয়েকজন শিক্ষানুরাগী বলেন, শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষার বিষয়ে শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা নেবে। এখন শিক্ষকেরাই যদি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে না পারেন, তাহলে তাঁদের কাছ থেকে কোমলমতি ছেলেমেয়েরা কী শিক্ষা পাবে? এ ধরনের ঘটনা শহীদদের প্রতি অশ্রদ্ধার শামিল।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, এই ঘটনার কি এমন বিচার হবে! আওয়ামী লীগের দোহায় দিয়ে হয়তো শিক্ষিকা বেঁচে যাবেন। প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে শিশু শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অনিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ হয়েছে। তার অপসারণের জন্য স্কুল মাঠে গ্রামবাসী ও এসএমসির সদস্যরা সম্প্রতি মানববন্ধন করেছে। তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।
জানতে চাইলে নামুইট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাহানারা মিরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যেকোনো ব্যাপারে নিউজ করা কিন্তু বাড়াবাড়ি। আমি আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। শহীদ মিনারে দেওয়া ফুল পরে যাচ্ছিলো দেখে দৌড়ে গিয়েছিলাম। জুতা খোলার সময় পাইনি। একটা সেলফিই তো তুলেছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। ঘটনাটি দুঃখজনক। তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিফা নুসরাত বলেন, শহীদ বেদিতে জুতা পায়ে ওঠা নিষিদ্ধ। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।