নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রামে আবাদি জমি-ভিটা খনন ও পুকুর সংস্কারের নামে খনন করে মাটি বিক্রির অপরাধে ৬জনের চার লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
একইসাথে এস্কেভেটর ঠিকারদারদের উপজেলা ছাড়তে কড়াভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কঠোর অবস্থানে রয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছেন দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। পুকুরখননকালে অভিযান চালিয়ে এস্কেভেটরের বেশকয়েকটি ব্যাটারি জব্দ করে ধ্বংস করা হলেও একজনকে দুটি ব্যাটারি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের দোহার চক ও ভদ্রদীঘি এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিফা নুসরাত ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম।
জানা গেছে, মাসুদ রানা নামের এক যুবক নিজেকে এস্কেভেটর সমিতির সভাপতি পরিচয় দিয়ে এ উপজেলায় আবাদি জমিতে পুকুরখনন কাজের ঠিকাদার সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। উপজেলা প্রশাসন ও সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার কথা রটিয়ে রাতের আধাঁরে পুকুরখনন করে মাটি বিক্রি করছে ওই ব্যক্তি। জমিতে এস্কেভেটর সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বেড়েছে।
উপজেলা ভূমি অফিস সুত্র জানিয়েছে, উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের বেলঘরিয়া-ভরতেতুলিয়া রাস্তার পাশে আবাদি জমিতে পুকুরখনন করার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জমির মালিক আব্দুস সাত্তারের ৫০ হাজার টাকা ও এস্কেভেটর চালক রকি হোসেনের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। থালতা-মাঝগ্রাম ইউনিয়নের গোপালপুর এলাকায় জমিতে পুকুরখনন করায় এস্কেভেটর ঠিকাদার আবুল কাশেমকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। বুড়ইল ইউনিয়নে পৃথক তিনটি অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। কহুলী গ্রামে জমি-ভিটা খনন করায় আক্কাস আলী শেখের ৫০ হাজার টাকা, দোহার চক এলাকায় এস্কেভেটর ঠিকাদার মাসুদ রানার ৫০ হাজার টাকা ও দোহার ভদ্রদীঘি এলাকায় এস্কেভেটর ঠিকাদার সাইফুল ইসলামের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এদিকে নন্দীগ্রাম সদর এলাকায় বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের পাশে দুর্ঘটনা ঝুঁকিপূর্ণভাবে গাছের গুঁড়ি রেখে ব্যবসা করায় স’মিল মালিক ইয়ারুল ইসলামের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম। পাশের আরেকটি স’মিল মালিকের ৫হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিফা নুসরাত।
সুত্র জানায়, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে রাতের আঁধারেও এস্কেভেটর দিয়ে চলছে পুকুরখনন কাজ। অপরিকল্পিতভাবে খনন করে প্রত্যেক ট্রাক্টর মাটি ৫শ’ টাকা থেকে ৭শ’ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। প্রশাসনের কঠোরতায় দিনের বেলা এস্কেভেটর ও মাটি বহনকাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর জমিতে থাকলেও ঠিকাদার ও জমির মালিক পক্ষের কাউকেই দেখা যায় না। জমিতে পুকুরখননের পাশাপাশি পুকুর সংস্কারের নামেও গভীর গর্ত করে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। সেইসব মাটি দিয়ে আবাদি জমিও ভরাট করা হচ্ছে। এতে কমছে ফসলি জমি। সরকারের নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। মাটি ভর্তি ট্রাক্টর চলাচল করায় সরকারের কোটি টাকায় নির্মাণকৃত সড়ক ও রাস্তাগুলো বেহাল দশায় পরিনত হচ্ছে। মাটি পরে রাস্তা নষ্ট হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নিরব।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম বলেন, আবাদি জমি-ভিটা ও পুকুর সংস্কারের নামে খনন করা যাবে না। পুকুর সংস্কার করতে হলেও অনুমতি লাগবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।