ট্রেন থেকে নামলেই নয়নকূলে সমুদ্র-পূর্ণ হচ্ছে ভ্রমণপ্রিয়দের স্বপ্ন

S M Ashraful Azom
0

: অবশেষে পূর্ণতা পাচ্ছে ভ্’রমণপিপাসুদে’র স্বপ্ন। এখন ট্রেন থেকে নেমেই সমুদ্রে পা বাড়াবেন পর্যটকরা। আ’র মাসছয়েক প’রই চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন যাবে কক্সবাজারে। যুক্ত হবে সারাদেশে’র রেল যোগাযোগও। একই সঙ্গে মিয়ানমা’র, চীনসহ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে’র করিডোরে’র সঙ্গে যুক্ত হবে বাংলাদেশ।

ট্রেন থেকে নামলেই নয়নকূলে সমুদ্র-পূর্ণ হচ্ছে ভ্রমণপ্রিয়দের স্বপ্ন



 কক্সবাজারে ঝিনুকে’র আদলে তৈরি করা দেশে’র প্’রথম আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনে’র কাজও শেষ পর্যায়ে ‘রয়েছে। কক্সবাজারে’র ঝিলংঝা ইউনিয়নে’র চান্দে’রপাড়া এলাকায় তৈরি হচ্ছে ঝিনুক আকৃতি’র আইকনিক ভবন। ২৯ এক’র জমি’র ওপ’র গড়ে ওঠা রেলস্টেশন ভবনটি এক লাখ ৮৭ হাজা’র ৩৭ বর্গফুটে’র। ভবনটি হবে ছয়তলা।

মূল ভবনে’র সামনে খোলা মাঠে তৈরি হবে ঝিনুকাকৃতি’র দৃষ্টিনন্দন একটি ফোয়ারা। যাত্রীরা ঝিনুক ফোয়ারা দিয়ে স্টেশনে ঢুকবেন। এ’রপ’র চলন্ত সিঁড়ি’র মাধ্যমে সেতু হয়ে উঠবেন ট্রেনে। আবা’র ট্রেন থেকে নেমে ভিন্নপথে বেরিয়ে যাত্রীরা পা বাড়াবেন সৈকত শহরে। এজন্য তৈরি হচ্ছে গমন ও বহির্গমনে’র দুটি সড়ক। গাড়ি পার্কিংয়ে’র তিনটি বড় জায়গাও থাকছে। 

ভবনে’র উত্তরে ৬৫০ মিটা’র দৈর্ঘ্য ও ১২ মিটা’র প্’রস্থে’র তিনটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হচ্ছে। প্’রতিটি প্ল্যাটফর্মে’র দৈর্ঘ্য ৬৫০ মিটা’র ও প্’রস্থ ১২ মিটা’র। এছাড়া এ স্টেশনটিতে পর্যটকরা লাগেজ স্টেশনে রেখে সারাদিন সমুদ্’র সৈকত বা দর্শনীয় স্থান ঘুরে রাতে’র ট্রেনে আবা’র ফি’রতে পা’রবেন নিজ গন্তব্যে। ভবনটিতে থাকবে টিকিট কাউন্টা’র, অভ্যর্থনা কক্ষ, তথ্যকেন্দ্’র, মসজিদ, শিশুদে’র বিনোদনে’র জায়গা, প্যাসেঞ্জা’র লাউঞ্জ, শপিং মল, রেস্তোরাঁ, তা’রকামানে’র হোটেল, রেস্তোরাঁ, কনফারেন্স হল ও কর্মকর্তাদে’র কার্যালয়।

২০১০ সালে’র ৬ জুলাই ‘চট্টগ্রামে’র চন্দনাইশ উপজেলা’র দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজা’র এবং রামু থেকে মিয়ানমারে’র ঘুমধুম সীমানা পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ (প্’রথম সংশোধিত)’ প্’রকল্প অনুমোদন দেয় স’রকা’র। প্’রকল্পে’র অধীনে দোহাজারী থেকে কক্সবাজারে’র রামু পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটা’র এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৯ কিলোমিটা’র রেললাইন নির্মাণে’র কথা ছিল।

২০১১ সালে’র ৩ এপ্রিল রেললাইন প্’রকল্পে’র উদ্বোধন করেন প্’রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৬ সালে’র ২৭ এপ্রিল প্’রকল্পটি ‘ফাস্ট ট্র্যাক প্’রকল্প’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। ২০১৮ সালে ডুয়েল গেজ ও সিঙ্গেল ট্র্যাকে’র রেললাইন প্’রকল্পে’র নির্মাণকাজ শুরু হয়। তবে মিয়ানমা’র স’রকারে’র সম্মতি না থাকায় আপাতত রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৯ কিলোমিটা’র রেললাইনে’র কাজ হচ্ছে না। দোহাজারী থেকে কক্সবাজা’র রামু পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটা’র রেললাইন নির্মাণে প্’রথমে ব্যয় ধরা হয় এক হাজা’র ৮৫২ কোটি টাকা। পরে ২০১৬ সালে প্’রকল্প প্’রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজা’র ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। অর্থায়ন করেছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ স’রকা’র।

প্’রথম পর্যায়ে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজা’র পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে ১০০ কিলোমিটা’র রেলপথ। দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজা’র পর্যন্ত ৩৯টি বড় সেতু, ২২৩টি ছোট সেতু ও কালভার্ট, বিভিন্ন শ্রেণি’র ৯৬টি লেভেল ক্’রসিং নির্মাণ করা হচ্ছে। হাতি চলাচলে’র জন্য থাকবে আন্ডা’রপাস। নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হা’রবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ, রামু ও কক্সবাজারে।

২০১৮ সালে’র ১ জুলাই এ অংশে’র ভৌত কাজ শুরু হয়। প্’রকল্পটি’র কাজ প্রায় শেষে’র পথে। ২০২৩ সালে’র মাঝামাঝি সময়ে প্’রকল্পটি সম্পন্ন হতে পারে। এ’রই মধ্যে কক্সবাজারে’র রামু, ঈদগাঁও, পেকুয়া ও চকরিয়া অংশে রেলট্র্যাক বসানো’র কাজ শেষ হয়েছে। 

প্’রকল্প পরিচালক মফিজু’র ‘রহমান বলেন, আগামি বছরে’র আগস্টে’র মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজা’র রেল চলাচল শুরু হবে বলে আশা ক’রছি। একই সঙ্গে শেষ পর্যায়ে ‘রয়েছে কক্সবাজা’র রেলওয়ে স্টেশনে’র কাজও।

বৃহস্পতিবা’র দোহাজারী থেকে কক্সবাজা’র পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ প্’রকল্প পরিদর্শন শেষে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, আগামি জুনে’র মধ্যে দোহাজারী-কক্সবাজা’র রেললাইন চালু হবে। তখন সারাদেশ থেকে ট্রেন সরাসরি কক্সবাজারে যাবে।  

রেলমন্ত্রী বলেন, ট্রেনে চড়ে কক্সবাজা’র ভ্’রমণ একসময় স্বপ্ন ছিল, এখন বাস্তবায়নে’র পথে। সারাদেশে’র মানুষ ট্রেনে করে পর্যটন নগরী সমুদ্’র সৈকতে আসা’র অপেক্ষায় ‘রয়েছেন। নির্ধারিত সময় আগামী বছরে’র জুনে’র মধ্যে কাজ শেষ হবে।

প্’রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, দোহাজারী-কক্সবাজা’র রেললাইন নির্মাণ প্’রকল্পে’র কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ৬০ কিলোমিটা’র রেললাইন বসানো’র কাজ শেষ। বাকি অংশেও রেললাইন বসানো’র কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হবে। কক্সবাজারে চলাচলে’র জন্য ট্যুরিস্ট কোচে’র আদলে উন্নতমানে’র কোচ দিয়ে ট্রেন চালানো হবে। এজন্য নতুন প্’রকল্প নেয়া হয়েছে। এ প্’রকল্পে’র আওতায় ৫৪টি কোচ কেনা হবে। যেগুলো’র জানালা সুপ্’রশস্ত। এতে মানুষ অনায়াসে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা’র সুযোগ পাবে।  



শেয়ার করুন

সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top