রৌমারী প্রতিনিধি : ফরম পূরণের টাকা পরিশোধ করেও এইচএসসি পরীক্ষার সীটে বসতে পারলেন না দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থী আল-আমিন। কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী সরকারি কলেজে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ উঠেছে, কর্তৃপক্ষের কর্তব্যে অবহেলা, দুর্নীতি ও দায়িত্ব হীনতার কারণেই ঐ কলেজের বিএম শাখার একাদশ শ্রেণীর কম্পিউটার বিভাগের প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থী আল-আমিনের ভাগ্যে অনিশ্চয়তা নেমে আসে।
সংশি¬ষ্ট কলেজের একাধিক সূত্র জানায়, রৌমারী সরকারি ডিগ্রী কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পুরণ কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই কর্তৃপক্ষ ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দেন। দরিদ্র পরিবারের আল-আমিন ফরমপূরণের জন্য অতি কষ্টে সংগৃহীত টাকা রৌমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানার মাধ্যমে কলেজের কমিটি সংশি¬ষ্ট বাংলা বিভাগের প্রভাষক সামছুল আলমের নিকট জমা দেন । এরপর তাকে বলা হয় ভালো করে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করো। এরপর থেকে আল-আমিন আর কলেজে আসেনি। গত ৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার কলেজে প্রবেশ পত্র তুলতে গিয়ে জানতে পারে তার ফরম পূরণ হয়নি। এ অবস্থায় এইচএসসি (বিএম) শাখার ওই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়।
রৌমারী সরকারি ডিগ্রী কলেজে ইতিপূর্বেও কর্তৃপক্ষের দুর্নীতি ও অবহেলায় একাধিক শিক্ষার্থীর ফরমপুরণ না হওয়ায় তাদের জীবনে নেমে এসেছিল অন্ধকার। অভিযোগ রয়েছে, কতিপয় ব্যক্তি শাসকদলের পরিচয় দিয়ে অল্প টাকায় শিক্ষার্থীদের ফরম পুরণসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার প্রলোভনে ফেলে দরিদ্র পরিবারের উঠতি বয়সের ছেলেদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। টাকা আদায় নির্বিঘন করতে এসব ব্যক্তিরা কলেজের শিক্ষকদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন বলেও অভিযোগ উঠে।
প্রতারণার শিকার শিক্ষার্থী আল-আমীন জানান, আমি সোহেল ভাই এর মাধ্যমে ফরম পূরণের জন্য ১৫ শত টাকা দিয়েছি। আগামী রবিবার থেকে পরীক্ষা শুরু হবে তাই প্রবেশপত্র তুলতে গিয়ে জানতে পারি আমার ফরম পূরণ হয়নি। সব ধরনের প্রস্ততি সম্পন্ন করার পরও পরীক্ষা দিতে পারলাম না। পড়া শোনার একটা বছর পিছিয়ে গেলাম।
এ ব্যাপারে রৌমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক সোহেল রানার সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি জানান, আলম স্যারের কাছে ফরমপূরণের জন্য শিক্ষার্থীদের তালিকাসহ টাকা দেওয়া হয়েছে। এরপরও কেন আল-আমীনের ফরম পূরণ হয়নি কলেজের স্যারে তা ভালো জানেন।
রৌমারী সরকারি ডিগ্রী কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক সামছুল আলম এর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অধ্যক্ষের নির্দেশে শুধু ফরম পূরণ কমিটিকে সহযোগীতা করেছি। শুনেছি ভুলবশত অন্য আল-আমিন নামের এক ছাত্রের ফরম পূরণ হয়েছে।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ সামিউল ইসলাম জীবনের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ফরম পুরণের জন্য দায়িত্ব দেয়া আছে। ফরম পুরণ কেন হলো না বিষয়টি আমি জানি না। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যাবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।