জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যমুনা সারকারখানায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এবং গুলাগুলির ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। আহত হয়েছে ১৫ জন।
এ ঘটনায় ৩১ অক্টোবর এসআই আব্দুল আজিজ বাদি হয়ে দুশতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ৩০ অক্টোবর রাতে আধিপত্ব বিস্তারকে কেন্দ্র ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সূত্রপাত হলে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। রবিবার রাত ৯টার দিকে রফিকুল ইসলাম সমর্থিত রায়হান কান্দারপাড়া বাজারে হামলার শিকার হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রফিকুল ইসলামের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে কারখানার গেটপাড় এলাকায় এলে আশরাফুল আলম মানিক গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। একই সময় সাবেক ইউপি সদস্য মিজানুর রহমানের বাড়িতে হামলা ও লুটতরাজ এবং রফিকুল ইসলামের মেসার্স বুশরা বাণিজ্যিক সংস্থার কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে ইটপাটকেলের আঘাতে এসআই আব্দুল আজিজ, এএসআই সাইফুল ইসলাম ও কনস্টেবল আব্দুস সালাম এবং উভয়পক্ষের মিনহাজ, রায়হান, রফিক, মজিদ, রশিদ, লালন, লাল চানসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। গুরুতর আহত মিনহাজ ও রফিককে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক জানান, রবিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে রফিকুল ইসলাম সমর্থিত রায়হানকে কান্দারপাড়ার কিছু লোক মারধর করে। বিষয়টি আমার লোকজনের উপর দায় চাপিয়ে তারা উত্তেজিত ও সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালায়। এসময় রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করা হয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
অপরদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, সরকার কাফকো থেকে যমুনা সারকারখানায় গ্রামসিকো লিমিটেডের মাধ্যমে ৩০ হাজার মে. টন ইউরিয়া সার আমদানি করছে। সারগুলো আনলোডের জন্য মেসার্স মাজেদা ট্রেডার্স দায়িত্ব পেয়ে এর সত্ত্বাধিকারী আশরাফুল আলম মানিক প্রতি ট্রাক থেকে ৫০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় মানিকের লোকজন সম্প্রতি চড়াও হয়। এর জের ধরে রবিবার রাতে উভয়পক্ষে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বলে তিনি জানান। তবে গুলিবর্ষণের কথা তিনি অস্বীকার করেন।
সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মহব্বত কবীর বলেন, যমুনা সারকারখানা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দুইটি পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। সংঘর্ষের ঘটনায় রফিকুল ও মানিকসহ ১২০ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও শতাধিক আসামী করে মামলা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।