মোঃ আব্দুস সালাম (চিরিরবন্দর) দিনাজপুর থেকে : চিরিরবন্দরে সজনার গাছের ডালে ডালে ফুটেছে ফুল। ফুল দেখার পর সজনে ডাটার বম্পার ফলনের আশায় বাড়ি বাড়ি ও বাগানে বাগানে গিয়ে গাছের সজনার আগাম কিনছেন মৌসুমি সজনার ব্যবসায়ীরা ।
আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এবার গত কয়েক বছরের চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে । এতে ব্যবসায়ীরা লাভবান হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন আগাম গাছ কেনা মৌসুমি ব্যাবসায়ীরা ।
এবার চিরিরবন্দর ১২ টি ইউনিয়নে গ্রামে-গ্রামে সব খানে গাছে গাছে প্রচুর সজনার ডাটার ফুল ফুটেছে। স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন হাট বাজারে সজনার ডাটার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মুখোরচক ও পুষ্টিগুইে ভরপুর সজনার ডাটা স্থানীয়ভাবে বিক্রির পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। বাজারে অন্যান্য সবজির চেয়ে সজনার দাম বেশি। তবে এবার গাছে গছে যেভাবে ফুল ফটেছে তাতে গতবারের চেয়ে এবার দাম একটু কমতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। অন্যান্য সবজির চেয়ে সজনে ডাটা পুষ্টিগুণ ও স্বাদে বেশি হওয়ায় যে কোন বয়সের মানুষ সজনা খেতে ভালবাসেন।
চিকিৎসকদের মতে সজনা সবজিতে ক্যালসিয়াম, খনিজ লবণ আয়রণসহ প্রোটিন ও শর্করা জাতীয় খাদ্য রয়েছে। এ ছাড়া ভিটামিন এ বি সি সমৃদ্ধ সজনা ডাটা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারি। শরীরের পুষ্টির জন্য গর্ভবতী ও প্রসুতি মায়েদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে বলে সজনা ডাটা ঔষধি সবজি হিসাবেও এর চাহিদা আছে। এছাড়া গাছের বাকল ও পাতা রক্তামাশায় পেটের পিড়া, উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ কার্যকর ভূমিকা রাখে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
সজনার ডাটা প্রধানত দুই প্রজাতির। এর মধ্যে এক প্রজাতির সজনে বছরে তিন-চার বার পাওয়া যায়। স্থানীয়ভাবে এর নাম রাইখঞ্জন। সজনার গাছ যে কোন পতিত জমি, পুকুর পাড় রাস্তা বা বাধের ধারে যে কোন ফাঁকা জায়গায় লাগানো যায়। এর কোন বীজ বা চারার প্রয়োজন হয় না। গাছের ডাল কেটে মাটিতে পুঁতে রাখলেই সজনে গাছ জন্মায়। সজনে গাছের কোন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। অযত্নে অবহেলায় প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে গাছ। বড় ও মাঝারি ধরনের একটি গাছে ছয় থেকে আট মণ পর্যন্ত সজনে পাওয়া য়ায়। বিনা খরচে অধিক আয় হওয়ায় সবজি চাষ অনেকেই ব্যাণিজ্যিকভাবে সজনে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে চিরিরবন্দর উপজেলার মাটি, পানি ও আবহাওয়া সজনার চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় উপজেলার ইউনিয়ন গুলোতে সর্বত্র প্রচুর সংখ্যক সজনে গাছ আছে। এসব গাছ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার মন সজনে উৎপাদন হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, এ উপজেলায় মাটি ও আবহাওয়া সজনে চাষে উপযোগী। এখানে ব্যানিজ্যিকভাবে সজনে চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ফলে অনেকে আম, জাম, কাঠাল লিচু বাগানের মত এখন সজনে গাছের বাগান করতে শুরু করেছে ।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।