নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রামে রণবাঘার হাটলাল মোড়ে কৈডালা এলাকায় মহাসড়কের পাশে ফসলি জমিতে মাটি ভরাট করে চালকল (অটো রাইস মিল) স্থাপনের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করে ভরাটকৃত মাটি সরিয়ে ফেলার জন্য আইনগত ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে উপজেলা জাতীয় পার্টি।
পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করে রণবাঘায় বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের পশ্চিমপাশে প্রায় ২০ বিঘা ফসলি জমিতে অপরিকল্পিতভাবে চালকল স্থাপনের জন্য গত দুই মাস ধরে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। এই মিলের কারণে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ধান আবাদি জমি রক্ষায় মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন উপজেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম দয়া।
অভিযোগের বিবরণ ও প্রাপ্ততথ্যে জানা গেছে, পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া একটিও অটো রাইস মিলের অনুমোদন দেয় না খাদ্য অধিদপ্তর। নীলফামারী সদরের সবুজপাড়া এলাকার মৃত তফর উদ্দিনের ছেলে সামসুল হক বর্তমান ঠিকানা নন্দীগ্রামের রণবাঘা কৈডালা উল্লেখ করে ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১৫ ভূমি ব্যবহারের জন্য গত ১৪ ফেব্রæয়ারি বগুড়া সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে আবেদন করেই চালকল স্থাপনের জন্য জমি ভরাটের কাজ শুরু করেন। সেখানে ‘অভিজাত গ্রæপ সামসুল হক অটো রাইস মিলস্ (প্রা:) লি: ইউনিট-৬’ লেখা একটি সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। দিনে ও রাতে ফসলি জমিতে মাটি ভরাটের কাজ করা হচ্ছে। পরিবেশ ছাড়পত্র আছে কিনা প্রশ্ন করা হলে সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্তরা তা দেখাতে পারেননি। ওই স্থাপনা নির্মাণে জমি ভরাটের জন্য পাশের একটি গ্রাম থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে আনা হচ্ছে। স্কেভেটর ও অবৈধ যানবাহনগুলো চলাচলের কারণে গ্রামের রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তা ও মহাসড়কে মাটি পড়ে থাকায় ক্ষনিকের বৃষ্টির পানিতে বড় ধরণের দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহাসড়কে চলাচলরত পণ্যবাহী ট্রাক ও মোটরসাইকেল চালকেরা দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। রাস্তা নষ্ট করার বিষয়েও স্থানীয় প্রশাসনের কঠোরতা দেখা যায়নি।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, জাতীয় পার্টি কৃষি ও কৃষকের উন্নতি চায়। নন্দীগ্রাম উপজেলা ধান চাষ ও চাল উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। সেখানে ধান আবাদি জমির শ্রেণি কিভাবে পরিবর্তন করা হলো। নাকি আইনের তোয়াক্কা না করে বা ছাড়পত্র ছাড়াই ফসলি জমির মধ্যে অটো রাইস মিল স্থাপন করা হচ্ছে। এই মিল চালু হলে গরম পানি, ছাই ও দূষিত বর্জ্যে শতশত বিঘা আবাদি জমির ফসল হুমকির মুখে পড়বে এবং কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এলাকার পরিবেশও দূষিত হবে, বয়স্ক ও শিশুরা শ^াসকষ্টে ভূগবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আদনান বাবু বলেন, ফসলি জমি ভরাটের মাধ্যমে চালকল স্থাপন বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শিফা নুসরাত বলেন, জমির শ্রেণি পরিবর্তন বিষয়ে জানা নেই। অভিযোগ পেয়ে রণবাঘার চালকল স্থাপনের কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তারা কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।