বাঁশখালী প্রধানসড়কে স্পীড ব্রেকার আছে, রং বা সংকেত চিহ্ন নাই

S M Ashraful Azom
0
বাঁশখালী প্রধানসড়কে স্পীড ব্রেকার আছে, রং বা সংকেত চিহ্ন নাই



 : চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার আনোয়ারা-বাঁশখালী পিএবি আঞ্চলিক সড়কে স্পীড ব্রেকারে দীর্ঘদিন কোনো রং বা সাংকেতিক চিহ্ন না থাকায় প্রায়ই ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে।

 তৈলারদ্বীপ সেতু থেকে বাঁশখালীর সীমান্তবর্তী টেইটং পর্যন্ত প্রায় দীর্ঘ ৩৪ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে রয়েছে ২৫ থেকে ৩০ টির অধিক স্পীড ব্রেকার। সাধারণত সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে সড়কে স্পীড ব্রেকার দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে কোন রকম নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অপরিকল্পিত ভাবে স্পীড ব্রেকার তৈরি করায় ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এরই মধ্যে অভ্যন্তরিণ সড়কেও ব্যক্তি উদ্যোগে যত্রতত্র স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য স্পীড ব্রেকার। যার কারণে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হচ্ছে। সাধারণ যানবাহন চলাচলকারীরা এতে নিত্য দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে প্রতিনিয়ত।

স্পীড ব্রেকারগুলোর আগে পরে নেই কোন প্রতিকী চিহ্ন, লেখা নেই কোন সতর্কবানী। এমনকি রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়নি ওই স্পীড ব্রেকারগুলো। কিছু কিছু স্পীড ব্রেকার এতো উঁচু যে, এগুলোর উপর দিয়ে গাড়ি চালানোর সময় বেশ জোরে ঝাঁকুনির সৃষ্টি হয়, যানবাহনের নীচে স্পীড ব্রেকার লেগে যায়।

এ নিয়ে প্রায়ই ড্রাইভারদের সাথে যাত্রীদের কথা কাটাকাটি ও বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হচ্ছে। এসব রাস্তায় যাতায়াতকারী রোগী ও শিশুরা ঝাঁকুনিতে প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ডেলিভারী রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া জীবনের ঝুঁকিতে পরেছে। বাঁশখালী প্রধানসড়কে ৮ থেকে ১০ বাজার বসে। আর হাট-বাজার, দোকান থেকে শুরু করে স্কুল, মাদরাসার সামনে অতি উঁচুতে স্পীড ব্রেকার নির্মাণ এবং স্পীড ব্রেকারে রং বা সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার না করায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

অনেক সময় বিভিন্ন মাহফিল ও মসজিদ নির্মাণের নামে পাকা সড়কের ওপর ইট ও মাটি দিয়ে অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করে গাড়ির পথরোধ করার চেষ্টা করছে অসচেতন মহল। জিসান ফারুখ নামের এক মোটরসাইকেল চালক জানান, উঁচু স্পীড ব্রেকারগুলোতে গাড়ির গতি কমিয়ে উঠার চেষ্টা করলে গাড়ি স্পীড ব্রেকারের ওপর উঠতে চায়না। তাই বাধ্য হয়ে জোরে চালিয়ে উঠতে হয়ে। মাঝেমধ্যে ওই স্পীড ব্রেকার গুলোতে উঠতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন মোটরসাইকেল চালকরা।

বাঁশখালী প্রধানসড়কে নিয়মিত যাতায়তকারী আবুল কাশেম সিকদার জানান, অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত এই স্পীড ব্রেকারগুলোর কারণে সাইকেল, ভ্যান, মোটরসাইকেল চালকরাও সমস্যায় পড়েছেন। প্রতিদিন ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। সাধারণত দুর্ঘটনা কমাতে সড়কে স্পীড ব্রেকার (গতিরোধক) তৈরী করা হয়। সেগুলোও আবার নির্দিষ্ট দ‚রত্বে, সেই সঙ্গে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাতেই স্থাপন করা হয়। কিন্তু উপকারী স্পীড ব্রেকার অনেক সময় ক্ষতিও করে। সড়কের বাঁকে মার্কিং বা সাইন বোর্ড সম্বলিত নেই কোন সাংকেতিক চিহ্ন। যার দরুণ প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনার মতো অনাখাঙ্খিত দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে।

নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে খোদ প্রধান সড়কেই নয়, অভ্যন্তরিণ সড়কগুলোতেই যত্রতত্রভাবে গড়ে উঠেছে স্পীড ব্রেকার। এ ব্যাপারে ঠিকাদারদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, সড়ক মেরামত করার সময় স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিরা নিজ নিজ বাড়ির সামনে স্পীড ব্রেকার দিতে বাধ্য করে।

সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, সড়কে স্পীড ব্রেকার দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ রাতের আঁধারে অনৈতিকভাবে স্পীড ব্রেকার বসায়। বিশেষ করে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কারণে যত্রতত্র সড়কে স্পীড ব্রেকার দিতে তারা বাধ্য হয়। বাঁশখালী প্রধানসড়কে নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে গড়ে উঠা স্পীড ব্রেকার গুলো ভেঙ্গে দিতে স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হবে। জনস্বার্থে যেখানে স্পীড ব্রেকার প্রয়োজন শুধু সেখানেই স্পীড ব্রেকার থাকবে। বাকি সব স্পিড ব্রেকার যথাসম্ভব অপসারণ করার ব্যবস্থাগ্রহণ করবো এবং জরুরী স্পীড ব্রেকারগুলো মার্কিং বা রং করার বিষয়টিও দ্রত গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

সিএনজি চালক দিদারুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুল, মাদরাসা, মসজিদের সামনে গতিরোধক দরকার। তা ছাড়া সব গতিরোধক সাদা রং দিয়ে চিহ্নিত করে দিলে ভালো হতো। কিছু কিছু গতিরোধক চলন্ত অবস্থায় বোঝা যায় না। এতে আমাদের সমস্যা হয়। গাড়ি ভর্তি যাত্রী থাকলে গতিরোধক পার হওয়ার সময় ঝাঁকি লাগে। নির্দিষ্ট জায়গায় গতিরোধক থাকলে যানবাহন চলাচলে সুবিধা হয়। আবার দুর থেকে আসা চালকরা রাস্তা অপরিচিত হওয়ার কারনে কোথায় স্পীড ব্রেকার আছে তা তারা বুঝতে পারেনা। এর ফলে অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হয়



শেয়ার করুন

সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top