আব্দুল লতিফ: আজ শুক্রবার ১০ ডিসেম্বর, এইদিনে পাকিস্তানী হানাদারদের কবল থেকে মুক্ত হয় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা।
দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কাদেরিয়া বাহিনীতে বিশেষ বীরত্বের অবদান রাখেন এই এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা। কাদেরিয়া বাহিনীর নেতৃত্বে যমুনা নদীতে পাকিস্থানী যুদ্ধ জাহাজ ধবংস করা হয়। এ সময় মুক্তিসেনারা ২১ কোটি টাকার গোলা বারুদ ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র কব্জা করে মুক্তিযুদ্ধের নতুন দিগন্তের সূচনা করেন।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে কাদেরিয়া বাহিনী গঠিত হবার পর টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের সব মুক্তিযোদ্ধা কাদেরিয়া বাহিনীর সঙ্গে একীভূত হয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে দুর্বার লড়াই গড়ে তুলে। মাকড়াই যুদ্ধে কাদের সিদ্দিকীর হাতে গুলি লাগলে তিনি মারাত্বক আহত হন। ৭ ডিসেম্বর ভুঞাপুর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় ৮ ডিসেম্বর রাত্রেই ঘাটাইলের প্রতিটি পাকবাহিনীর অবস্থানে এক যোগে আক্রমণ করা হবে খোদ কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে।
এই মর্মে প্রতিটি কোম্পানী ও কোম্পানী কমান্ডারদের আক্রমণস্থল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এই লক্ষ্যে ৫ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে ৩০টি কোম্পানীতে বিভক্ত করে ৫টি মূল দলে ভাগ করে আক্রমণের স্থান নির্ধারণ করা হয়। ৮ ডিসেম্বর রাত ১১টায় হাবিবুল হক বেনুসহ আরও একটি কোম্পানী রতনপুর অবস্থান নেয়। গোলাপের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে বানিয়া পাড়া সেতুর পশ্চিম পাশে তেলেঙ্গাপাড়া গ্রামে অবস্থান নেয়। ৯ ডিসেম্বর কাদের সিদ্দিকীর নিদের্শ অনুযায়ী কালিদাস পাড়া, গুণগ্রাম, ঘাটাইল সদর ও বানিয়া পাড়া সেতু একযোগে আক্রমণ করা হবে। সে পকিল্পনা মোতাবেক ভোর চারটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত চতুর্দিক থেকে বৃষ্টির মত গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঘাটাইল থানা আক্রমণ করেন মক্তি বাহিনীরা। পরে মেজর হাবিব ভোরে বানিয়া পাড়া সেতু, মেজর মোস্তফা কালিদাস পাড়া সেতু দখল করে ঘাটাইল থানার দিকে অগ্রসর হন। কাদের সিদ্দিকী নিজেই পশ্চিম দিক থেকে আক্রমণ করেন। এ যুদ্ধে ৫০ জন পাকহানাদার নিহত ও ১৫০ জন বন্দী হয়। এই দিন সম্পূর্ণরূপে ঘাটাইল থেকে হানাদার মুক্ত হয়। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে ঘাটাইল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।