কাজিপুর প্রতিনিধি : করোনার প্রভাবে বদলে গেছে কাজিপুরের সাব-রেজিষ্টার অফিসে কর্মরত দেড়শ দলিল লেখকদের ও তাদের সহকারিদের জীবন-যাত্রা।। কিছুদিন আগেও যেখানে ছিল মানুষের ভিড়, হাক-ডাকে কথা বলাই ছিল দূরুহ ব্যাপার। করোনার কারণে সেখানে নেই কোন কোলাহল। টেবিল-চেয়ার ও বেঞ্চিতে ময়লা পড়েছে। জমি বেচাকেনা বা কাজের জন্য কেউ ঘুরছেন না। এখানে যারা কাজ করতেন তাদের আয় রোজগারও দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে দূর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন এসব অসহায় মানুষ। কর্মহীন এসব দলিল লেখক আর তাদের সহকারীদের অবস্থা এখন খুবই শোচনীয়।
উপজেলা দলিল লেখক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, কাজিপুরে ১টি সাব-রেজিষ্ট্রার অফিস রয়েছে। কিন্তু কাজের সুবিধার্থে রেজিস্টার বসেন দুই জায়গায়। একটি অফিস মেঘাই বাজার, অপরটি গান্ধাইল বাজারে অবস্থিত। দুই অফিস মিলে ৪০ জন দলিল লেখক ও তাদের সহকারী মিলে মোট দেড়শ জন কাজ করেন। আর এরসাথে অফিসের আশপাশের চা স্টল, ছোট্ট টং দোকানের অনেকেই এই অফিসে যাতায়াতকারি মানুষের সেবার উপরই তাদের সংসার চলে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন অফিস আদালত বন্ধ থাকায় তাদের প্রতিদিনের আয় রোজগার বন্ধ রয়েছে। এখানে কাজ করে তাদের দিন এনে দিন খাওয়া ভালই যাচ্ছিল। ভবনের সামনে যেসব টেবিল চেয়ার ও বেঞ্চে বসে কাজ করতেন সেই সব স্থানে এখন ময়লার স্তুপ পড়েছে। ভুলেও কেউ এদিকের পথ মাড়ান না। অসহায়ত্বের কথাও কারো কাছে এরা বলতে পারছেন না। সংসার সামলাতে গিয়ে হিম সিম খাচ্ছেন তারা।
উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ফজলার রহমান জানান,‘ দলিল লিখেই চলে আমাদের সংসার। করোনায় জমি রেজিস্ট্রি বন্ধ থাকায় আমাদের উপার্জনের আর কোন পথ নেই। কিভাবে সংসারের ভরণ পোষণ করবো, এই চিন্তায় আছি।’ তিনি জানান, দুউ-চারজন ছাড়া অন্যদের অবস্থাও ভালো নায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ সরকার এই সব অসহায় দলিল লেখক আর তাদের সহকারীদের দিকে যাতে সু-দৃষ্টি দেন সেই দাবী জানাচ্ছি।’
উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারন সম্পাদক, মজনু মিয়া জানান, ‘আমরা আসলে অন্য কোন কাজ করতে পারিনা। কারো কাছে হাত পাততেও পারিনা। এই অসহায় দলিল লেখকদের দিকে সরকার দৃষ্টি দিলে তারা খেয়ে বাঁচতে পারবে।’
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।