বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তহবিল স্থগিত করলো যুক্তরাষ্ট্র

S M Ashraful Azom
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তহবিল স্থগিত করলো যুক্তরাষ্ট্র

সেবা ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারি রূপ নেয়া নোভেল করোনা ভাইরাস ইস্যুতে চীনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অর্থায়ন সাময়িকভাবে স্থগিত করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে এক প্রেস কনফারেন্সে এ ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মহামারিতে ‘মৌলিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ’ হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তাই জাতিসংঘের এ সংস্থাকে অর্থ দেয়া বন্ধ করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

কয়েকদিন ধরেই এ সংস্থার বিরুদ্ধে ট্রাম্প নানা রকম অভিযোগ উত্থাপন করে যাচ্ছিলেন। জবাবে এ সময়ে রাজনীতি না করে সবাইকে একত্রিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো কথায় কান না দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে বিরোধটাকে জিঁইয়েই রাখলেন ট্রাম্প। তার অভিযোগ, জাতিসংঘের এই সংস্থাটিতে অব্যবস্থাপনা রয়েছে। চীনে যখন করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে তখন তারা একে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে। তাই এই সংস্থাকে অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।

ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের জবাবে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সম্পদ সরবরাহ কর্তন করার সময় নয়।

বিবিসির তথ্যানুযায়ী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তহবিলে এককভাবে সবচেয়ে বড় অঙ্কের অর্থায়ন করে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর তারা এ সংস্থাকে দিয়েছে ৪০ কোটি ডলার। যা ছিল সংস্থাটির বার্ষিক বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, ২০১৮-১৯ সালে সেখানে চীনের অবদান ছিল ৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার এবং স্বপ্রণোদিত অনুদান ১ কোটি ডলার।

এদিকে করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্চে ৬৭ কোটি ৫৯০ লাখ ডলার সহায়তার আবেদন জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা কমপক্ষে ১০০ কোটি ডলারের নতুন আবেদন করার পরিকল্পনা করছে।

করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্র। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী বুধবার সকাল পর্যন্ত দেশটিতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ১৪ হাজার ২১১ জন। মারা গেছেন ২৬ হাজার ৬৪ জন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে আমাদের যথেষ্ট উদ্বেগ আছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের উদারতাকে বড় করে দেখা হয়েছিল কিনা। এক্ষেত্রে চীনের উহান শহরে যখন প্রথম করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ে তখন এ বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তিনি প্রশ্ন রাখেন, চীনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কী মেডিকেল বিশেষজ্ঞদের সেখানে পাঠিয়েছিল কিনা এবং তারা কী চীনের স্বচ্ছতার ঘাটতির বিষয়ে কোনো কথা বলেছিল কিনা। এই করোনা মহামারিকে তার উৎস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মৃত্যুর সংখ্যাকে অনেক কমিয়ে আনা যেত। তা করা হলে হাজার হাজার মানুষের জীবন রক্ষা হতো। বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষতি এড়ানো যেতো। পক্ষান্তরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইচ্ছাকৃতভাবে চীনের মুখ রক্ষার নিশ্চিয়তা দিয়েছে। চীন সরকারের কর্মকাণ্ডের পক্ষে কথা বলেছে।

এ সময় সাংবাদিকরা ট্রাম্পকে মনে করিয়ে দেন যে, তিনি নিজেই কিছুদিন আগে ভাইরাস সংক্রমণ রোধে চীনের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন।

হোয়াইট হাউজের সংবাদ সম্মেলনের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান যে যুক্তরাষ্ট্রে লকডাউন তুলে নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ঘোষণা করার পরিকল্পনা 'প্রায় চূড়ান্ত' হয়েছে।

সোমবার ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করে বলেছিলেন যে অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নররা না চাইলেও তিনি লকডাউন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তখন তা নিয়ে তুমুল সমালোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী অঙ্গরাজ্যগুলোর প্রশাসনের দায়িত্ব রাজ্যের গভর্নরদের।

ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top