মো. শাহ্ জামাল, জামালপুর সংবাদদাতা: জামালপুরের মেলান্দহে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল কেনার দায়ে এক মহিলাকে ২০ দিনের কারাদন্ড দিয়েছে মোবাইল কোর্ট। ১৫ এপ্রিল বিকেল ৫টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট-ইউএনও তামিম আল ইয়ামীন এই দ›ডাদেশ প্রদান করেন।
দন্ডাদেশ প্রাপ্ত জাহানারা বেগম সখিনা (৪০) নাংলা ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের আবুল কাশেমের স্ত্রী। তিনি জানান-আল আমিন নামে এক চাউল ব্যবসায়ী আমাকে চাউল কিনে দেলে বস্তাপ্রতি ১০টাকা পারিশ্রমিক দেবে। এই শর্তে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিবস্তা চাউল ৭০০ টাকায় ক্রয় করি। ওদিকে এই ঘটনার পর থেকেই আল আমিন গা ঢাকা দিয়েছে।
এলাকাবাসি জানিয়েছেন, সকালে দিনমজুর ছম শেখের বাড়িতে জে¦ারপূর্বক ১০ বস্তা চাউল রেখে আসে আরেক চাউল কালোবাজারি আনিসুর রহমান। রহস্যজনক অন্যের বাড়িতে চাউল রাখার ঘটনাটি মুহুর্তেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি স্থানীয় মেম্বার মাজহারুল ইসলাম মিস্টারকে জানানো হয়। মেম্বার চাউলগুলো গ্রাম পুলিশের হেফাজতে রেখে প্রশাসনকে খবর দেন। ইতেমধ্যেই স্থানীয়রা দিনমজুর ছম শেখের বাড়ি ঘেরাও শেষে চাউল লুটের চেষ্টা চালায়। এ নিয়ে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে ছমর ছেলে মনসুর হেলালকে মারধর করলে বিঘয়টি আরো ঘোলাটে হয়।
ওদিকে চাউল কেলেংকারির ঘটনার মূলহোতা স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যানের কারসাজি বলে অপপ্রচার হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়। উপজেলা প্রশাসন অনুসন্ধান চালিয়ে অন্য বাড়ি থেকে আরো কিছু চাউল জব্দ করেন। এ সময় জাহানারা বেগম সখিনাকেও আটক করে। অপরদিকে সখিনাকে দিয়ে যারা চাউল ক্রয় করালেন, তাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি স্থানীয়দের। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকায় কোন ধরণের হতদরিদ্র লোকের নাম দেয়া হয়েছে সেটাও খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসি।
নাংলা ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক মাফল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন-চাউল কেলেংকারির ঘটনা ঘটলেই চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দায়ী করা হয়। আসলে এই চাউলগুলো খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির। বর্তমান সময়ে যে পরিমান রিলিফ দেয়া হচ্ছে, তা চাহিদার তুলনা খুবই কম। এখান থেকে রিলিফ হেরফের করার সুযোগ নাই। এই ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত অপরাধির বিচার হোক এটা আমরা চাই।
চাউল কেলেংকারির মূলহোতা আল আমিনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামিম আল ইয়ামীন জানান-মোবাইল কোর্টের সময় তাকে পাওয়া যায়নি। খাদ্য কর্মকর্তাকে তদন্তের ভার দেয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টের পর দোষীদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।