গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: গাইবান্ধায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল বস্তায় বস্তায় উদ্ধার করেছে পুলিশ প্রশাসন। গতকাল জেলার দুটি উপজেলায় পৃথক তিনটি স্থান হতে ১২৮ বস্তা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল উদ্ধার করা হয়েছে। খাদ্য বান্ধব কর্মসূচী সুবিধাভোগী অনেকেই এ চাল খেতে না হলেও তারা এই কার্ড সুবিধাভোগী হওয়ায় কালোবাজারে মিলছে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল । এ সুবিধা ভোগীরা এসব চাল উত্তোলন করে অথবা ডিলারের কাছে কার্ড রেখে আগাম সুবিধা গ্রহন করায় আজ এসব চাল কালোবাজারীদের গুদাম ঘরে মজুদ করা । কোনটা ধরা পড়ে আর কোন গুলো ধরা পড়ে না । জেলা জুড়ে চালানো গোপন জড়িপে জানা যায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ডিলারগণের নিকট যতজন সুবিধাভোগী রয়েছে এর প্রায় ৫৫ পার্সেন্ট সুবিধাভোগী এসব চাল বিক্রি করে ডিলার অথবা কালোবাজারিদের কাছে।
লকডাউন করা হয়েছে জেলা গত ১০ এপ্রিল সারাদেশের ন্যায় খাদ্য চাহিদা বেড়ে গেছে । আগের চেয়ে বর্তমান সময়ে এসব সরকারি সুবিধার উপরে নজর পড়েছে সর্বস্তরের মানুষের । এখন আর গোপন থাকছে না এসব খাদ্য বান্ধব চাল কালোবাজারির ব্যবসা । গোবিন্দগঞ্জে অন্যত্র পাচার করার সময় খাদ্যবান্ধব কর্সসূচীর ১৮ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ডিলার জাহিদুল ইসলাম ও এক সিএনজি চালককে আটক করেছে পুলিশ। এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের হয়েছে। এ চাল উদ্ধারের সূত্র ধরে সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল অবৈধভাবে কেনার অভিযোগে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে একটি আড়ৎ সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১ টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মনের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে পৌর শহরের পশ্চিম চারমাথায় সুজাউলের চালের আড়ৎ সিলগালা করে দেওয়া হয়। এ সময় আড়ৎতে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ৩০ কেজি ভরের ২০টি খালি বস্তা ও অন্য বস্তায় রাখা ৬০ বস্তা সরকারি চাল পাওয়া যায়। এরআগে বৃহস্পতিবার দুপুরে বৈরাগীহাট ফাঁড়ি পুলিশ কর্তৃক আটক করা সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ১৮ বস্তা চাল ক্রয়ের সাথে সুজাউল জড়িত আছে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়ায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, অভিযানে সুজাউল কে পাওয়া যায়নি। কিন্তু তার আড়ৎতে সরকারি চালের খালি বস্তা ও অন্য বস্তায় রাখা সরকারি চাল পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।
অপরদিকে একইদিন খাদ্য বান্ধব কর্মসুচীর চাল সুন্দরগঞ্জে একটি পরিত্যক্ত বাড়ী থেকে সরকারি ৫০ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের ডোমেরহাট এলাকা থেকে এসব চাল উদ্ধার করা হয়। থানা পুলিশ জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়ীতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় সেখানে মজুদ করা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ৫০ বস্তা চাল পাওয়া যায়। চালগুলো সেখান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তবে এসব চালের মালিক বা ডিলার কে তা জানা যায়নি। কেউ সেখানে মজুদ করেছেন কিনা সেটিও নিশ্চিত হয়নি পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে এসব চাল কোন অসাধু ব্যবসায়ী কালোবাজারে বিক্রি করার জন্য ওই পরিত্যক্ত বাড়ীতে রাখেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহিল জামান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই পরিত্যক্ত বাড়ী থেকে ৫০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। তবে, চালগুলো কি কারণে মজুদ করা হয়েছে তা জানা যায়নি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে বলেও জানান ওসি।
উল্লেখ্য , করোনাকান্তিকালে এরআগে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটায় উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল উদ্ধার হয়। খাদ্যবান্ধব কর্মসুচীর প্রায় ১৫০০ কেজি চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত ১৩ এপ্রিল সোমবার সকালে মুরগীর খাদ্যের বস্তায় ভরে নয়াবন্দর এলাকা থেকে বোনার পাড়ার দিকে ভ্যানে করে চাল গুলো নিয়ে যেতে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে একটি ভ্যান আটক করে। এবং অন্য ভ্যান গুলো পালিয়ে য়ায়। ভ্যানওয়ালা কে জিজ্ঞেস করলে সে বলেন এই চাল গুলো ডিলার মাজেদের। পরে ডিলার মাজেদ কে আটক করে পুলিশ। এঘটনায় আরো ১৫ শ কেজি সন্ধান করছে পুলিশ।