সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশ পুলিশকে মানুষের প্রথম ভরসার স্থল হিসেবে তৈরি করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের নবনিযুক্ত আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ।
১৮ এপ্রিল শনিবার দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সে পুলিশের সব রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন ও বিশেষায়িত ইউনিটের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
আইজিপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন ২০২১ ও ভিশন ২০৪১ এর স্বপ্নপূরণে পুলিশকে মানুষের প্রথম ভরসার স্থল হিসেবে তৈরি করতে চাই।
পুলিশকে মানবিক আচরণ করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশের বিভিন্ন স্থানে লকডাউন কার্যকর রয়েছে। সঠিকভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে হবে। অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের চলাচল সীমিত করতে হবে। এ সময় জনগণের পাশে থাকতে হবে। মানুষের সঙ্গে কোনো ধরনের খারাপ আচরণ করা যাবে না।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য খোলা স্থানে অথবা ফুটপাতে বাজার বসাতে হবে। বাজারে একমুখী চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে কমপক্ষে ২০ ফুট দূরত্ব বজায় থাকে। চায়ের দোকানে আড্ডা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে কেউ পণ্যের মজুতদারি অথবা মূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক রাখতে হবে।
সরকারি ত্রাণ বিতরণ এবং ওএমএসের চাল বিতরণে অনিয়মরোধে ভূমিকা রাখবে পুলিশ। এ জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে; বর্তমানে পুলিশের অনেক সক্ষমতা রয়েছে, সেটা কাজে লাগাতে হবে।
ফোর্সের কল্যাণে কাজ করার তাগিদ দিয়ে আইজিপি বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালনে কোনো পুলিশ সদস্য অসুস্থ হলে তার চিকিৎসায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
মাদক ও অন্যান্য অপরাধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা আর মাদক দেখতে চাই না। মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নতুন নতুন অপরাধ প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এছাড়া, কোথাও কোথাও চুরি ডাকাতি বেড়েছে। এসব বন্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। সাইবার অপরাধ, অর্থনৈতিক অপরাধ ইত্যাদি প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ বন্ধ করতে হবে। ভুয়া সংবাদ, গুজব বন্ধ করতে হবে।
দুর্নীতিমুক্ত পুলিশ প্রশাসন গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে নতুন আইজিপি বলেন, আমরা দুর্নীতিমুক্ত পুলিশ প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। কোনো পুলিশ সদস্য অবৈধ আয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে তাকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। টিম স্পিরিটের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, পুলিশের কাজের মূল ভিত্তি হবে টিম স্পিরিট। এককভাবে নয়, পুলিশ সদস্যদের টিমে কাজ করতে হবে।
এ সময় পুলিশের ২ লাখ ১২ হাজার সদস্যের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সবাইকে দেশের কল্যাণে এবং রাষ্ট্রের অগ্রগতি ও উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
আইজিপি তার বক্তব্যের শুরুতে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তিনি জাতীয় চার নেতা, ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ বীরাঙ্গনাসহ মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সব শহীদকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
ভিডিও কনফারেন্সে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।