৫ বছরের শিশুকে টেস্ট করাতে মায়ের অনুরোধ

S M Ashraful Azom
৫ বছরের শিশুকে টেস্ট করাতে মায়ের অনুরোধ

সেবা ডেস্ক: চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা এলাকার দোলনা বিশ্বাসের ৫ বছরের শিশু সন্তান অসুস্থ। ডাক্তারের পরামর্শ, টেস্ট করাতে হবে। যে টেস্টটি করাতে হবে তার ব্যবস্থা আছে শুধু বড় কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।

কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে শহরে যানবাহন বন্ধ। তাই সন্তানের জরুরি টেস্ট নিয়ে চিন্তায় অস্থির মা দোলনা। হুট করে মাথায় বুদ্ধি এলো তার। সোমবার রাত ১২টার দিকেই কল দিলেন পতেঙ্গা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়াকে। ওসিকে জানালেন, পাঁচলাইশের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করাতে হবে তার সন্তানের টেস্ট। সঙ্গে সঙ্গেই রাতে টহলের দায়িত্বে থাকা পতেঙ্গা থানা পুলিশের একটি টিমকে এই দায়িত্ব দেন ওসি।

ভোর সাড়ে ৬ টায় মা ও সন্তানকে পাঁচলাইশের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে আসেন পতেঙ্গা থানার পুলিশ সদস্যরা। শুধু পৌঁছে দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেনি পুলিশ, টেস্ট শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে আবার পতেঙ্গার বাসায় পৌঁছে দেয় পতেঙ্গা থানার এই পুলিশ সদস্যরা!

রাতভর ডিউটি করে ভোরে এই দায়িত্ব পালন করা পুলিশ সদস্যদের এমন আন্তরিকতা দোলনা বিশ্বাসের মনে দাগ কেটে দিল।

দোলনা বিশ্বাস বলেন, ‘আমার শিশু সন্তান খুব অসুস্থ। ডাক্তার চারটি টেস্ট দিয়েছে। পতেঙ্গায় টেস্টগুলো করানোর সুযোগ নেই। তাই পাঁচলাইশ এলাকার বড় ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতেই কেবল টেস্টগুলো করানো হয়। ভোরেই খালি পেটে টেস্টগুলো করাতে হবে। সড়কে চলছেনা গাড়ি। আমি অস্থির হয়ে পড়লাম৷ নিরুপায় হয়ে কল দিলাম পতেঙ্গা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়াকে। তিনি সাথে সাথেই আমাকে আশ্বস্ত করলেন। একজন পুলিশ অফিসারের নাম্বার দিলেন। ভোরের আমার বাসার নিচে পুলিশ গাড়ি নিয়ে হাজির। তারা আমাদের নিয়ে গেলেন পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। প্রায় এক ঘন্টা অপেক্ষা করে নিয়েও এলেন।’

দোলনা বলেন, ‘পুলিশের নেতিবাচক খবর শোনা হয় কমবেশি। কিন্তু দেশের পুলিশই মানুষের প্রধান ভরসার জায়গা। এটি অন্তত আমি বিশ্বাস করি। এই মুহুর্তে পুলিশ যদি আমার পাশে না দাঁড়াতো আমি অসহায় হয়ে যেতাম। হয়তো আমার সন্তানের টেস্টগুলো করানো সম্ভব হতো না।’

এ বিষয়ে পতেঙ্গা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া বলেন, ‘প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে বেশ কিছুদিন ধরে নগরীতে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সরকারের নির্দেশনা মানতে গিয়ে কাউকে যেন জরুরি চিকিৎসায় নিয়ে বিপাকে পড়তে না হয় সে জন্য আমরা দায়িত্ব নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘একজন সন্তানের মা যখন বাচ্চার অসুস্থতার কথা বলে পুলিশের সহযোগিতা চায়, তখন অন্য অনেক কাজের চেয়ে এটি জরুরি হয়ে পড়ে। তাই আমি রাতে টহলের দায়িত্বে থাকা এএসআই প্রণব দাশকে এ দায়িত্ব দিই। তিনি আন্তরিকতা দেখিয়ে ওদের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান। টেস্ট শেষে আবার তাদের বাসায়ও পৌঁছে দেন।’

ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top