সেবা ডেস্ক: জুতা সেলাই বা সেলুনে কাজ করে দিন আনে দিন খায়, সমাজে এমন পিছিয়ে পড়া মানুষের বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রায় ২০০ কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন জামালপুরের মাদারগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবির। ১৫ এপ্রিল মাদারগঞ্জে নিজ বাড়িতে তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে প্রতিজন কর্মহীন মানুষকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।
সূত্র জানায়, মেয়র মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবীর মাননিব সহায়তা নিয়ে যাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তারা সমাজে পিছিয়ে পড়া রবিদাস ও নরসুন্দর পরিবারের সদস্য। সমাজে তাদের কোন ঠাঁই নেই। এই ভয়াবহ করোনায় তাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। দোকানের শাটার বন্ধের সাথে সাথে তাদের পেটও বন্ধ। নেই রোজগার, নেই হাতে টাকা-পয়সা বড় অভাবে আছি। এইসব মানুষ জড়ো হয়েছিল বালিজুড়ি বাজারে মানবিক সাহায্য নেওয়ার জন্য।
এই সাহায্য নিতে আসা সেলুন কর্মচারী বিশ্বনাথ শীল, নিরঞ্জন শীল, সুমনশীল বলেন, মাদারগঞ্জ সদরের বালিজুড়ি বাজারের সেলুনে কাজ করে তাদের জীবিকা চলে। করোনার কারণে সেলুন বন্ধ। দিন আনি দিন খাই, এমন পরিস্থিতিতে আমরা বিপাকে পড়েছি। কেউ দেখে না। আজ মেয়রের সাহায্য পেয়ে আমরা খুশি, যে কেও খোঁজ না নিলেও তিনি আমাদের কথা স্মরণ করেছেন।
পৌরসভার জোনাইল বাজারের পাশে রবিদাসপাড়া। যাদের পেশা হলো জুতা মেরামত আর মরে যাওয়া গরুর চামড়া সংগ্রহ করে তা বিক্রি করা। এখন অনেকে পৈত্রিক পেশায় নেই। সেলুনে কাজ বা পাহারাদারের কাজ করেন। কৃষিকাজ ও ব্যবসায় কেউ তাদের নেয় না। দোকানদারিও করতে পারে না। তাই এই করোনার কারণে তাদের রুজি রোজগার একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। বউ, পোলাপান নিয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে তাদেরকে। তাদের মধ্যে মানবিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন পৌর মেয়র। মেয়র নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে মানবিক সাহায্য প্রদান করে আসছেন।
সাহায্য পেয়ে হীরা লাল রবিদাস, রাজমহল রবিদাস, নারায়ণ রবিদাস বলেন, কয়েকদিন ধরে হাতে টাকা নেই। বাজার খাওয়া প্রায় বন্ধ। এমন সময় মেয়র সাব এগিয়ে এলেন। তার এই সাহায্য আমাদের অনেক বড় উপকার হয়েছে। এই সাহায্য দিয়ে পরিবার নিয়ে অন্তত কয়েকদিন খেতে পারবো।
এ ব্যাপারে মাদারগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবির জানান, সমাজে পিছিয়ে পড়া লোকদের খোঁজ নেওয়ার কেউ নেই। করোনার এই পরিস্থিতিতে তারা কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাই সরকারি সাহায্যের দিকে না তাকিয়ে নিজেই যা পারি তাই নিয়ে এগিয়ে গেলাম। পৌরসভায় বরাদ্দ পেলে তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাহায্য বা ত্রাণ প্রদান করা করা হবে।
মাদারগঞ্জ সেলুন মালিক সমিতির সভাপতি সুদর্শন চন্দ্র সরকার বলেন, পৌর এলাকায় আমাদের কয়েকশ’ সেলুন কর্মচারী রয়েছেন। তারা পুরোপুরি কর্মহীন। বাড়িতে রান্না বন্ধ হয়ে গেছে। তারা মানুষের কাছে হাত পাততে পারে না। লোকলজ্জার ভয়ে নীরবে অভাব সহ্য করছেন। এমন সংকটকালে মানবিক সাহায্যের হাত বাড়ানোর জন্য মেয়র সাহেবকে ধন্যবাদ জানাই।