রফিকুল আলম, ধুনট (বগুড়া): বগুড়ার ধুনট উপজেলায় সবার জন্য করোনা ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলা থেকে যমুনা নদীপথে বাড়িতে ফেরত আসা বিভিন্ন পেশার লোকজন। সড়ক পথ বন্ধ থাকায় তারা নদীপথ বেছে নিয়েছেন। প্রতি রাতেই এসব লোকজন আসছেন। কেউ একা, কেউ-বা স্বপরিবারে এসেছেন। ফলে এ উপজেলার ৪ লাখ মানুষ করোনা সংক্রমণের ঝঁকিতে পড়েছেন। তবে এখনও করোনা রোগী সনাক্ত হয়নি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিভিন্ন জেলা থেকে ১টি পৌরসভা ও ১০ ইউনিয়নে এ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার লোক এসেছেন। এরমধ্যে পৌরসভায় ৪৫, ধুনট ৫২, এলাঙ্গী ১৫২, কালেরপাড়া ৩৮, নিমগাছি ৭৫, চিকাশি ৫০, গোসাইবাড়ি ৯৫, ভান্ডারবাড়ি ৮৭, চৌকিবাড়ি ৩০৬, মথুরাপুর ৯৬০ ও গোপালনগর ইউনিয়নে ২৫ জন। কাগজ কলমে তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। কিন্ত তারা হাটবাজারে, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে অবাধে যাতায়ত করছেন। এতে করে করোনা সংক্রমণের সর্বাধিক ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
আগতদের তথ্য পুলিশ, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। প্রশাসন এলাকায় ফেরতদের বাড়িতে লাল নিশানা টানিয়ে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে করোনা মোকাবেলায় গঠিত প্রতিটি ইউনিয়ন কমিটিকে নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্ত ইউনিয়ন কমিটির সদস্যরা সদ্য ফেরতদের বাড়িতে গিয়ে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা বললে তারা অনেকেই উত্তেজিত হয়ে অশালীন ব্যবহার করছেন।
ধুনট পৌরসভার মেয়র এজিএম বাদশাহ বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পৌর এলাকার শতাধিক লোক এসেছেন। তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। একদিকে ঘরে দিয়ে আসলে একটু পর বাজারে পাওয়া যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য নিয়েও লাভ হচ্ছে না, পুলিশ গেলে ঘরে যায়, চলে এলে বেরিয়ে পড়েন তারা। সবরকম চেষ্টা করেছি, কিন্তু হোম কোয়ারেন্টাইন মানছেন না।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, সদ্য যারা আসছেন, তাদের সম্পর্কে তথ্য পেলেই হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করছি। করোনা মোকাবেলায় সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে সচেতনতামুলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে পুলিশ কর্মকর্তা করোনা মোকাবেলায় গঠিত ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির সাথে সমন্বয় করে কাজ করছেন।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, সদ্য ফেরতদের বাড়িতে লাল নিশানা টানিয়ে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারা মানছেন না, তাদের সম্পর্কে তথ্য পেলে আমি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছুটে যাচ্ছি। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি, তবে এজন্য সবাইকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।