সেবা ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার ও জীবন বাজি রেখে মোকাবেলা করছে প্রশাসন। এরই মাঝে পাইকগাছায় চোরাই পথে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মরত শ্রমিকরা বাড়িতে ফিরে আসছে।
খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জেলার বাইরে থেকে আসা যানবাহন খুলনায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আধারে যানবাহনে করে ঢুকছে অসংখ্য ইটভাটার শ্রমিক। ফলে জনমনে সৃষ্টি হচ্ছে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই দেশের বিভিন্ন ইটভাটায় কর্মরত শ্রমিকরা এলাকায় ফিরতে শুরু করেছে। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনে রাতের আঁধারে পিকআপ, মহেন্দ্র, করিমন, ইজিবাইকে করে প্রায়ই প্রতিদিন রাতেই এসব শ্রমিকরা নিজ নিজ এলাকায় ফিরছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গত ৩-৪ দিনের ব্যবধানে শতশত বিভিন্ন জেলায় কর্মরত ইটভাটার শ্রমিকরা স্ব-স্ব এলাকায় বা বাড়িতে প্রবেশ করছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে পাইকগাছা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ। স্থানীয়দের অনেকে এমন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং অবিলম্বে তাদেরকে চিহ্নিত করে হোম কোয়ারান্টাইনে রাখার নির্দেশনা জারী করতে প্রশাসনের প্রতি জোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, ইটভাটা মালিকদের মৌসুম শেষ হওয়ায় এবং মহামারী করোনার সংক্রমণ রোধে প্রশাসন কর্তৃক ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়ায় শ্রমিকদের ছেড়ে দেয় সংশ্লিষ্ট ইটভাটার মালিকরা। এমতাবস্থায় মৌসুম শেষে ঘরে ফেরার টানে এসব শ্রমিক প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে নিজ নিজ এলাকায় ফিরতে শুরু করে। শতশত শ্রমিকরা এলাকায় এসে রাস্তাঘাট, দোকান, হাট-বাজারসহ লোকালয়ে অবাধ বিচারণ করছে। মানছে না করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা। তাদেরকে হোম কোয়ারান্টাইনে ১৪ দিন ঘরে থাকার কথা বললে বা সামাজিক দূরত্বের বিধি-নিষেধের কথা বললে ক্ষিপ্ত হয়ে সংঘর্ষের রূপ ধারণ করছে। শুনছেনা কোন কথা, করছেনা কারোর তোয়াক্কা। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে।
গদাইপুর, মঠবাড়ী, চেচুয়া, গোপালপুর, কপিলমুনি, মনগর, বারোডাঙ্গা, কাশিমনগর, হরিঢালী, আগড়ঘাটা, রাড়ুলী, চাঁদখালী, লস্কর, সোনাদানা সহ বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকরা তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ফেরা ও অবাধ চলাফেরা করার করণে এলাকাবাসী আতঙ্কিত।
এলাকার বিশিষ্টজনরা মনে করেন, এসব ব্যক্তিদের মধ্যে যদি কেউ করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি এসে থাকেন তবে তার মাধ্যমে এ ভাইরাস অন্যান্যের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি, থুথু,কফ এর মাধ্যমে এই ভাইরাস বিস্তার লাভ করে। যেহেতু অন্যরা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেহেতু ১৪ দিন হোম কোয়ারান্টিনে থেকে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারলে ঝুঁকি কমবে। তারা বলেন,ওসি সাহেব নিজেই বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে এদেরকে সতর্ক করেছেন,প্রশাসন জীবন বাজি রেখে দিনরাত পাহারা দেওয়ার পরেও এগুলি প্রতিনিয়ত হচ্ছে। আসলে আমাদের নিজেদের দায়বদ্ধতা থেকে সচেতনতা বাড়াতে হবে। খুবই দুঃখজনক এসব মানুষ প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের আরোও কার্যকরী পদক্ষেপ ও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।