শামীম তালুকদার: জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলায় চলতি রবি মৌসুমের ফসল ভুট্টা চাষ বেড়েছে অনেক।উপজেলা কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে এবার ভুট্টার আবাদ হয়েছে।
এক সময় বকশীগঞ্জ উপজেলায় বছরের এ সময়ের আবাদী ফসল ছিল গম কিন্তু আবহাওয়া ও খরচ,শ্রম,দাম কম হওয়ার কারণে ভুট্টা চাষ বাড়ছে ব্যপকভাবে।বগারচর,সাধুরপাড়া,মেরুর চর,নিলক্ষিয়াসহ উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে ভুট্টা চাষ বেড়েছে,উপজেলার নদীতে জেড়ে উঠা চরে এক সময় বাদাম,গম,আখ আবাদ ব্যাপক হলেও বর্তমানে তার স্থান করে করে নিয়েছে লাভজনক ভুট্টা।মাদারের চর গ্রামের কৃষক নুরু মিয়া জানান,দুই বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন এতে জমি তৈরি,সার,বীজ,পানিসেচ সহ সর্বমোট খরচ প্রায় দশ হাজার টাকা ক্ষেতের পরিস্থিতিতে আশা করছেন গতবারের চেয়েও ভালো ফলন।
বকশীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃআলমগীর আজাদ জানান,এবারও উপজেলায় লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে ১১৯৫ হেক্টর জমিতে ভূট্টার আবাদ হয়েছে এবং কৃষি অফিস হতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সেবা দেওয়া হচ্ছে।আবহাওয়া ভাল থাকলে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার ভুট্টায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ ফলন হবে ফলশ্রুতিতে কৃষক লাভবান হতে পারবে।
ভূট্টার দাম পাওয়ার কারণ মূলত ভূট্টার চাহিদা থাকা অপরদিকে ভূট্টা আবাদ আবহাওয়া উপযোগী ও সহজ।সারা দেশের মত উপজেলায় ভুট্টা চাষ বৃদ্ধির কারণ-
১\ বর্তমানে অধিকাংশ ছোট-বড় নদীতে সারা বছর পানির প্রবাহ না থাকায়,নদীর বেশির ভাগ এলাকায় চর পড়ে যাচ্ছে। যেখানে অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা ফলন খুব ভালো হয়। যেমন-যমুনার চর, দশানি নদীর চর এছাড়াও অনেক নদীর চরে ইদানীং প্রচুর ভুট্টা চাষ হচ্ছে।
২\ভুট্টার সঙ্গে অন্যান্য ফসল যেমন- লেগুম শস্য, পেঁয়াজ, আলু ও বাদাম আন্ত:ফসল ও মিশ্র ফসল হিসাবে চাষ করা যায়, ফলে এক্ষেত্রে কৃষকরা অধিক লাভ এবং ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়।
৩\এছাড়াও ভুট্টা C4 (সি ফোর) উদ্ভিদ হওয়ায় কারণে সোলার শক্তিকে কাজে লাগতে পারে এবং পর্যাপ্ত সেচের ব্যবস্থাপনা না থাকলেও খরা সহ্য করে ভুট্টা গাছ তার স্বাভাবিক ফলন নিশ্চিত করতে পারে।
৩\সেচ কম লাগার কারণে বিদ্যুৎ এর খরচ কম হয় এবং ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ারের কোন ক্ষতি হয় না, যা পরিবেশের ভারসাম্যকে রক্ষা করে।
৪\ভুট্টাতে রোগ ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ অত্যন্ত কম, ফলে উৎপাদন খরচও কম। যে কারণে কৃষকরা ভুট্টা চাষে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
৬\রাস্তায় ফেরি করে পপকর্ণ (খই ভুট্টা) বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে।
৭\তাছাড়া ভুট্টা গাছের অবশিষ্টাংশ কৃষক তাদের বাড়িতে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করতে পারছে এবং সবুজ পাতা গো খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা যায়।
বকশীগঞ্জে ভূট্টার আবাদ বৃদ্ধির বিষয়ে কৃষি সংশ্লিষ্ট সকলে দেখছেন ইতিবাচক ভাবে একই সাথে ভুট্টা সংরক্ষণে স্টোরেজ পদ্ধতির প্রত্যাশা করছেন তারা।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।