সেবা ডেস্ক: সহিহ মুসলিম : ৫০৩৯ থেকে বর্ণিত আছে, ‘স্বামী-স্ত্রীর মাঝে শয়তানে ঝগড়া লাগিয়ে দেয়, যাতে তারা একজন থেকে আরেকজন পৃথক হয়ে যায়।’।
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর উপরোক্ত হাদিসটি সবসময় মাথায় রাখুন। এবং ঝগড়া-বিবাদ এড়িয়ে চলে শয়তানকে পরাজিত করুন।
এখন তাহলে জেনে নেয়া যাক স্ত্রী’র রাগ-অভিমানে স্বামীর করণীয় সম্পর্কে-
প্রথমে স্ত্রীর রাগ-অভিমানের কারণ নির্ণয় করুন। স্ত্রীর রাগারাগির সময় সঙ্গে সঙ্গে প্রতিউত্তর করে ঝগড়া না বাড়িয়ে বরং ধৈর্য্যশীলতার পরিচয় দিয়ে চুপ থাকুন। সেখান থেকে তা সম্ভব না হলে, অন্য ঘরে চলে যান। এরপর স্ত্রীর মেজাজ ঠান্ডা হওয়ার পর দরদের সঙ্গে বাস্তব অবস্থা বুঝিয়ে তার মান-অভিমান বা রাগ ভেঙ্গে দিন।
পরিস্থিতি যদি সীমার বাইরে চলে যায়, স্ত্রীর রাগ সামাল দেয়ার মত স্বামীর সামর্থ্য আর না থাকে, তাহলে স্ত্রীর নিকটস্থ ঘনিষ্টজনদের ডেকে তাদের মাধ্যমে সমস্যা নিষ্পত্তি করতে হবে। (সূরা নিসা : ৩৫)
স্বামীর উচিত স্ত্রী’র সাধারণ ভুলগুলো ক্ষমা করা এবং পরবর্তীতে না করার জন্য হাসিমুখে শুধরে দেয়া। স্ত্রী দোষ করে থাকলে বার বার তার দোষগুলো না বলাই উত্তম। অন্যথায় সমস্যা আরো প্রকট হতে পারে।
স্ত্রীকে তার পছন্দের হাদিয়া-উপঢৌকন দেয়া যেতে পারে। একান্ত মুহূর্তে ইসলামের কথা, হেদায়াতের কথা বোঝানো যেতে পারে এবং স্ত্রীকে ইসলাম ভালোভাবে বুঝার জন্য বই-পত্র কিনে এনে দেয়া যেতে পারে।
এভাবে কৌশলের মাধ্যমে স্ত্রী’র রাগ প্রশমিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং এক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি না করাই স্বামীর কর্তব্য।
কেননা রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হে পুরুষেরা! তোমরা নারীদেরকে সর্বদা সদুপদেশ দাও। কেননা তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে বাম পাঁজরের বাঁকা হাড় দিয়ে। তুমি যদি তাকে সোজা করতে চাও, তাহলে তা ভেঙ্গে যাবে। আর যদি একেবারে ছেড়ে দাও তাহলে সে বাঁকাই থাকবে।’ (বুখারি : ৫১৮৬)
তাহলে হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী স্ত্রীলোকদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে বাম পাঁজরের বাঁকা হাড় দিয়ে (রূপকার্থে)। তাদের আচরণের মাঝে কিছুটা বক্রতা থাকবেই। অপরদিকে কেউ সেই বক্রতাকে একেবারে সোজা করার কল্পনা করা নিষ্ফল ও অলীক ধারণা। সেরকম কিছুতে তা ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা আছে বলে হাদিসে সতর্ক করা হয়েছে।
তাই নারী তথা স্ত্রী’র বক্রতাকে মেনে নিয়েই হেকমত ও কৌশলের সঙ্গে ঠান্ডা মাথায় বুঝিয়ে তাদেরকে মানিয়ে নিয়ে ঘর সংসার চালিয়ে যাওয়াই স্বামীর কর্তব্য।
আর মনে রাখা বাঞ্ছনীয় যে, আপনার স্ত্রীও একজন মানুষ। ভালোলাগা, খারাপলাগা তারও থাকতে পারে। সবার বুঝ একই রকম হয় না। অনেকেই মনে করে, আরেকটা বিয়ে করলে শান্তি পাবো। মূলত সেইখানেও শান্তি মিলে না। শান্তি বিবাহে নয়, শান্তি থাকে মনে, বন্ধুত্বময় সম্পর্কে, নিজের সুখের চেয়ে অন্যকে সুখে রাখার মাঝে। অন্যায়ভাবে জুলুমকারী কখনোই রেহাই পাবে না। অবশ্যই স্বামীকে এর কঠিন জবাবদিহিতা করতে হবে আল্লাহর সামনে।
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করি সুন্দর হোক, ভালো থাকুক প্রতিটি সম্পর্ক। আমিন।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।