স্কুল ছাত্রকে ধর্মান্তরিত করার প্রতিবাদে মেলান্দহে বিক্ষোভ

জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের মেলান্দহে অপহরণপূর্বক স্কুল ছাত্র কিশোর ইয়াছিন ইসলাম আকাশকে জোর করে মুসলমান থেকে খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত করা ও ওলামায়ে কেরামদের উপর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে ইত্তেফাকুল উলামা মেলান্দহ শাখা। ২২ সেপ্টেম্বর জোহর নামাজ শেষে মেলান্দহ জামিয়া হুসাইনিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে মেলান্দহ বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে উপজেলা টিটিডিসি ঈদগাহ মাঠে এসে সমাবেশে পরিনত হয়। সমাবেশে প্রায় ৫ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানের উপস্থিতিতে সমাবেশে বক্তারা বলেন- দেশে সকল ধর্মের মানুষ একসাথে সম্প্রিতির সাথে বহুদিন থেকে বসবাস করে আসছে। এদেশে মুসলমান, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ থাকবে কিন্তু আমাদের মুসলমান সন্তানদের জোর করে খ্রিষ্টান বানাবে তা যেন ভবিষ্যতে আর না হয়।

বক্তব্য রাখেন- মেলান্দহ জামেয়া হুছাইনিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও জেলা ইত্তেফাকুল ওলামার সভাপতি আলহাজ মুফতী শামসুদ্দিন, জেলা উত্তেফাকুল উলামার সহ-সভাপতি আল্লামা আমানুল্লাহ কাশেমী, উপজেলা সহ-সভাপতি আজহারুল ইসলাম, উপজেলা সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ্, দুরমুঠ ইউনিয়নের সভপতি মাওলানা শামছুল হক, পৌর সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ, মেলান্দহ বণিক সমিতির সভাপতি আলহাজ কিসমত পাশা।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা- তামিম আল ইয়ামিন ও মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ করীদের আশস্ত করে বলেন- অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও ওলামায়ে কেরামদের উপর যে নতুন মামলা হয়েছে তা তদন্তাধীন রয়েছে, এ মামালায় ওলামায়ে কেরামগণ যাতে কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সমাবেশ শেষে ইত্তেফাকুল উলামা মেলান্দহ উপজেলা শাখা’র পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হাতে স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য-  গত ১৭ সেপ্টেম্বর মেলান্দহে ভয়ভীতি-প্রলোভন-স্বজনদের হত্যার হুমকী অবশেষে অহরণপূর্বক স্কুল ছাত্র কিশোর ইয়াছিন ইসলাম আকাশ (১৪)কে জে¦ার করে মুসলমান থেকে খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৭ সেপ্টেম্বর জহুরুল ইসলাম ওরফে জহিরকে (৬৫) আটক করে পুলিশ। আকাশের বাড়ী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদীর তীর শ্যামপুর গ্রামে।

আটককৃত জহির ইসলামপুর উপজেলার কুলকান্দি গ্রামের বাবর আলীর ছেলে। জহির আশির দশক থেকে খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত হয়। অভিযুক্ত জহির আকাশকে বাইবেল হাতে দিয়ে শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত করে বুকে ও হাতের কব্জিতে ক্রুশ অঙ্কিত করে। পরদিন এ ঘটনাটি জানা জানি হলে আকাশের স্বজনদের হত্যার হুমকী দিয়ে এক লাখ টাকা, কোন পথে নামক একটি বইসহ গলায় খ্রিষ্টান ধর্মের প্রতীক সম্বলিত লকেট পরিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। একপর্যায়ে জহিরকে টাকা ও লকেট ফেরত দিয়ে খিষ্টান ধর্ম পালনে অস্বীকৃতি জানায় এবং স্কুল শিক্ষকদের নিকট ঘটনাটি প্রকাশ করলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। আকাশের মা আনজুয়ারা বেগম বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। অপরদিকে এঘটনায় উপজেলার আলেম সমাজ আকাশের মা আঞ্জুয়ারা বেগমের মামলার সহযোগিতা করায় জহিরের মেয়ে বাদী হয়ে নেত্রীস্থানীয় আলেমদের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা দায়ের করে।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ এই বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন