গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: কমিউনিটি পুলিশিং ডে ২০১৯ গাইবান্ধায় বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে পালিত হয়। কর্মসূচীর মধ্যে ছিল বর্ণাঢ্য র্যালী, আলোচনা সভা, শান্তি শৃংখলা রক্ষা ও কমিউনিটি পুলিশিংয়ে বিশেষ অবদান রাখায় সংবর্ধনা, স্বেচ্ছায় রক্তদান, ছাত্রছাত্রীদের চিত্রাংকন, বিতর্ক, রচনা প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রীতি ফুটবল ম্যাচ। এবারে কমিউনিটি পুলিশিং ডে’র মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘পুলিশের সঙ্গে কাজ করি মাদক জঙ্গি সন্ত্রাস মুক্ত দেশ গড়ি’।
আজ ২৬ অক্টোবর শনিবার সকালে স্থানীয় স্বাধীনতা প্রাঙ্গণ সংলগ্ন পিকে বিশ্বাস রোড কেক কেটে এবং বেলুন উড়িয়ে সেখান থেকে বর্ণাঢ্য র্যালীসহ দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি রংপুর রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি মো. ইকবাল হোসেন বিপিএম (বার)। পরে একাধিক জাতীয় পতাকা, ফেষ্টুন, প্লেকার্ড, ব্যানারসহ একটি বর্ণাঢ্য র্যালী সেখান থেকে যাত্রা করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ফিরে আসে।
র্যালী শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির আহবায়ক এম. আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও তার প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন রংপুর রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি মো. ইকবাল হোসেন, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, পৌর মেয়র অ্যাড. শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির মিলন, জেলা আ’লীগের সভাপতি অ্যাড. সৈয়দ শামস-উল আলম হিরু, সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব প্রতাপ ঘোষ প্রমুখ।
পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এ দেশের পুলিশ বাহিনী সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সাথে নিয়ে অপরাধমূলক বাংলাদেশ গড়ে চায়। সেজন্য তিনি দেশকে ভালো বাসুন এবং দেশ থেকে অপরাধ মুক্ত করতে পুলিশকে সহযোগিতা করার আহবান জানান।
প্রধান অতিথি এডিশনাল ডিআইজি মো. ইকবাল হোসেন বলেন, সা¤প্রতিক সময়ে পুলিশের একার পক্ষে এই বিশাল জনগোষ্ঠীর আইন শৃংখলা রক্ষা ও শান্তি শৃংখলার উন্নয়ন অত্যন্ত দুরহ। এ কারণেই পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ এই চিন্তা চেতনা নিয়ে পুলিশের পাশাপাশি আইন শৃংখলা উন্নয়নের সহায়ক শক্তি হিসেবে পুলিশিং কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্ব দিতে হলে মাদক জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস মুক্ত দেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে পুলিশের সাথে মিলেমিশে কাজ করে যেতে হবে। তিনি বলেন, উন্নয়নের প্রধান শর্ত হচ্ছে নিরাপত্তা, যা পুলিশের মাধ্যমে অর্জন করতে হলে পুলিশের কাজে সহযোগিতার মানসিকতা নিয়ে সমাজের ভালো মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে। এজন্য তিনি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
আলোচনা সভা শেষে অতিথিদের গাইবান্ধা জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির পক্ষ থেকে উপস্থিত অতিথিদের বিশেষ সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। সেইসাথে কমিউনিটি পুলিশিং আন্দোলনে গাইবান্ধা জেলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় পুলিশিং কমিটির কর্মকর্তা ও সদস্যদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। বিশেষ অবদানের জন্য যারা সম্মাননা প্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন গাইবান্ধা জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির এম. আবদুস সালাম, আবু জাফর সাবু, প্রতাপ ঘোষ, সাইফুল আলম সাকা, জিয়াউর রহমান হেনরী, শাহ আহসান হাবিব রাজিব প্রমুখ।
তদুপরি আইন শৃংখলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য জেলার বুলবুলির চরে ডাকাত ধরতে গিয়ে নিহত দুলালের স্ত্রী, গরু চোর ধরতে সহায়তা করার জন্য কামারজানির বাটিকা চরের সেলিম ব্যাপারী এবং অটোবাইক ডাকাতি থেকে রক্ষা করায় কুপতলা গ্রামের আঙ্গুর মিয়া ও রওশন হাবিবকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। এছাড়া রচনা, চিত্রাংক ও বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। শেষ পর্যায়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে পুলিশ সদস্য ও অন্যান্যদের মধ্যে সাদুল্যাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশ কনস্টেবল তানিয়া আকতার, ফারহানা আকতার, সাংবাদিক সরকার মো. শহিদুজ্জামান এবং নৃত্য পরিবেশন করে ফাহিমা। পরে আমার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠের ছাত্রছাত্রীরা একটি নাটিকা পরিবেশন করে।
এদিকে অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে দুপুরে স্থানীয় পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী, এবং বিকেলে গাইবান্ধা পুলিশ লাইন্স মাঠে কমিউনিটি পুলিশিং বনাম পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
পুলিশ, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ব্যানার, ফেষ্টুন নিয়ে এই বর্ণাঢ্য র্যালীসহ সকল কর্মসূচিতে অংশ নেয়। এছাড়া জেলার সাতটি উপজেলায় একই ধরণের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং ডে পালন করা হয়।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।