সেবা ডেস্ক: পশ্চিম ভারতের গুজরাট রাজ্য থেকে পুলিশ সন্দেহভাজন এক পশু চোরকে গ্রেফতার করতে সফল হয়েছে বলে জানিয়েছে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি বিপন্ন ভারতীয় শ্লথ প্রজাতির ভালুক অবৈধভাবে শিকার করতো এবং তার যৌনাঙ্গ খেত।
বেশ কয়েক বছর ধরে ইয়ারলিন নামের ওই ব্যক্তি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। ঘটনাটি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ প্রথম সজাগ হয় যখন ভারতের জাতীয় এক পার্কে একটি মৃত ভালুকের লিঙ্গবিহীন দেহ পাওয়া যায়।
মধ্যপ্রদেশের বনবিভাগের কর্মকর্তা রীতেশ সিরোথিয়া বলেন, ইয়ারলিন পার্ধি-বেহেলিয়া নামে এক যাযাবর উপজাতি গোষ্ঠী; যারা বিশ্বাস করেন প্রাণীর লিঙ্গ খেলে যৌনশক্তি বৃদ্ধি পায়।
তবে তিনি বলেছেন, ইয়ারলিনকে ১৯ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয়েছে পশ্চিম ভারতের গুজরাট রাজ্য থেকে। তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি মধ্য ভারতে অবৈধ বাঘ শিকারি চক্রের অন্যতম হোতা।
মধ্য ও পশ্চিম ভারতে বাঘসহ বিপন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণী চোরা-শিকার এবং এসব প্রাণীর দেহাংশ নিয়ে ব্যবসার বেশ কয়েকটি মামলার সঙ্গে ইয়ারলিন জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। পুলিশের চোখ এড়াতে ওই ব্যক্তি ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করতো।
ইয়ারলিনের বিরুদ্ধে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তিনি অথবা তার কোন আইনজীবী এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে মন্তব্য করেননি। বুধবার তাকে আদালতে হাজির করা হয় এবং পরে তাকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
বনবিভাগের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের প্রধান সিরোথিয়া বলেন, ‘আমরা তাকে খুঁজে বের করার এবং ধরার জন্য একটা বিশেষ সেল গঠন করেছিলাম। ছয় বছর ধরে তোকে আমরা ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
মধ্য প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জঙ্গলে মূলত এই পার্ধি-বেহেলিয়া উপজাতির মানুষের বসবাস। তারা মূলত শিকার করে জীবনধারণ করে। বন্যপ্রাণী শিকার ভারতে অবৈধ, এমনকী আদিবাসী বা উপজাতি গোষ্ঠীর মানুষদের জন্যও। যদিও প্রথাগত জীবনধারণের তাগিদে বা তাদের বন্য আচার পালনের জন্য গোপনে শিকার অব্যাহত রয়েছে।
ভারত সরকার বলছে, তারা বনজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীল আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর জন্য বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা করছে। কিন্তু এসব সম্প্রদায়ের মানুষ এখনো সমাজের প্রান্তিক পর্যায়েই রয়ে গেছে এবং তাদের জীবনযাপনের ধারা বদলায়নি।
ইয়ারলিনকে প্রথম গ্রেফতার করা হয় ২০১৩ সালে। পুলিশ ওই সময় কান্হা জাতীয় পার্কে দুটি শ্লথ বা কালো ভালুকের লিঙ্গবিহীন মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার পর তাকে আটক করে। ভালুক দুটির দেহ থেকে যৌনাঙ্গ ছাড়া পিত্তথলিও সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।
এক বছর কারাগারে রাখার পর তাকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয় এবং এরপর থেকে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।