
রোকনুজ্জামান সবুজ, জামালপুর: কম্পিউটার শিক্ষার বেহাল দশা বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার কিছুই শিখানো হচ্ছে না । জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কম্পিউটার শিক্ষা পাঠদানের নামে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা শিক্ষকরা বেতন উত্তোলন করেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতাম‚লক করা হলেও উপজেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসায় পর্যায়ের সরকারিভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার শিক্ষার বিষয়টি পাঠ্যক্রমের অর্ন্তভ‚ক্ত থাকলেও বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই হাতে-কলমে কম্পিউটার শেখানোর কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে ।
কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর দেওয়া হয়েছে এমন অনেক প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। অন্যদিকে বিদ্যুৎ সংযোগ আছে কিন্তু কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর পরিচালনার জন্য দক্ষ শিক্ষকের অভাব। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিজেই কম্পিউটার চালাতে পারদর্শী নন। এ কারণে কম্পিউটার শিক্ষার মান শ‚ন্যের কোটায় পড়ে আছে।
উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় স‚ত্রে জানা যায়, উপজেলায় মাধ্যমিক ও দাখিল মাদ্রাসা পর্যায়ের প্রায় অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরকারিভাবে সরবরাহ করা হয়েছে। সরেজমিনে ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাগজে-কলমে কম্পিউটার থাকলেও বাস্তবে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটারের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। কম্পিউটার নষ্ট কিংবা অন্যের কাছ থেকে ধার করে আনা কম্পিউটার দেখিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করা হয়।
আবার সরকারিভাবে যে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর দেওয়া হয়েছে সেগুলোতে বেশির ভাগ শিক্ষকরা তা চালাতে পারেন না। মাদ্রাসাগুলোর কাগজে-কলমে যেসব ল্যাপটপ,প্রজেক্টর এবং কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে অধিকাংশ শিক্ষা নেই,বাস্তবে তার দুই তৃতীয়াংশ মাদ্রাসায় লোডশেডিংয়ের অজুহাতে শিক্ষা দেওয়া হয় না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, অনেক প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রজেক্টর সরকারিভাবে বিতরণ করা হয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন পাঁচটি করে ক্লাস নেওয়ার কথা। কম্পিউটার শিক্ষকদের এ বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ দিয়ে আনা হয়েছে। যে সব প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না ওই প্রতিষ্ঠান বিরোদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কাচিমারচর উচ্চ বিদ্যালয়, গাইবান্ধা সাজেদা-মাহমুদ উচ্চ বিদ্যালয়, পোড়ারচর আব্দুস সাত্তার উচ্চ বিদ্যালয়, গোয়ালেরচর উচ্চ বিদ্যালয়সহ অনেক বিদ্যালয়েই কম্পিউটার শিক্ষা দেয়া হচ্ছে না। অথচ এসব বিদ্যালয়ে কম্পিউটারের শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হয়ে ছাত্রছাত্রীদের কম্পিউটার শিক্ষা না দিয়ে মাসের পর মাস লাখ লাখ টাকা বেতন-ভাতা তুলছেন নিয়মিত।
পোড়ারচর আব্দুস সাত্তার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, কম্পিউটার শিক্ষককে দিয়ে অন্য ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। কাচিমারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা সোলাইমান জানান, শুধু আমাদের বিদ্যালয়ের নয়, কম্পিউটার শিক্ষার এমন দ‚রাবস্থা বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।