ধানের দেশে ড্রাগনের রাজত্ব

S M Ashraful Azom
0
ধানের দেশে ড্রাগনের রাজত্ব
সেবা ডেস্ক: ‍দিনাজপুর জেলাকে আমরা ধানের রাজ্য হিসাবেই চিনি। এ জেলা দেশের অন্যন্য জেলার চেয়ে ধান খুব বেশি জন্মে। ধানের জেলা দিনাজপুরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে জনপ্রিয় ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বিদেশি ফল ড্রাগনের চাষ হচ্ছে। এ ফল চাষ করে অনেকের ভাগ্যে পরিবর্তনের চাকা ঘুরছে। দিনাজপুরে মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের জন্যও উপযোগী। তাই দিনাজপুরে বিস্তীর্ণ ক্ষেতজুড়ে শোভা পাচ্ছে বিদেশি ফল ড্রাগন।

সারিবদ্ধভাবে আরসিসি পিলারে বাইকের পুরোনো টায়ারে জড়িয়ে থাকা গাছে ঝুলছে ড্রাগন ফল। এ ফল চাষ করে অনেকে আশাতীত ফলনও পাচ্ছেন। ফল বিক্রি হচ্ছে ক্ষেত থেকেই। দিনাজপুর সেতাবগঞ্জ সুগার মিলের কান্তা ফার্মে ১৫ একর ২৫ শতক জমিতে এবারই প্রথম ৪০ হাজার ড্রাগন ফলের চারা রোপন করে সফলতার দিকে এগিয়েছেন। বাংলাদেশ চিনি শিল্পের চেয়ারম্যান একেএম দেলোয়ার হোসেন এফসিএমএ এর উজ্জল সম্ভাবনার চিন্তা থেকেই  ড্রাগনের চাষ শুরু করা হয়েছে ।

বিরামপুরের কৃষক মতিয়ার জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে ড্রাগন চাষ করেছিলেন। ভালো ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় এবার আরো দেড় বিঘা জমিতে ড্রাগনের চাষ করছেন।

দিনাজপুরের স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি ড্রাগন ফল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি ফল ৩০০ গ্রাম থেকে ৫০০ গ্রামের বেশি ওজনের হয়ে থাকে। ড্রাগন ফল খেতে সুস্বাধু এবং অন্যান্য ফলের থেকে দাম বেশি এক বছর পর থেকে গাছে ফল ধরা শুরু হয়।

চারা উৎপাদনে প্রতিটি সিমেন্টের পিলারে চারটি ড্রাগন ফলের চারা লাগাতে হয়। চারা রোপণের আগে গোবর ও জৈব সার মাটিতে উর্বর করে নেয়া হয়। ১০ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত প্রতিটি টপে ড্রাগন ফল উৎপাদন হয়ে থাকে। ড্রাগন ফলের চারা যত বেশি বয়স হবে ততই ফলের পরিমাণ বাড়বে। ড্রাগন ফলের পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে দেশ ও বিদেশে রফতানি করে অর্থনৈতিক চাহিদা মিটানো সম্ভব। ড্রাগন ফলের চারা রোপনে উজ্জল লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত এবং পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে সাফল্য ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হতে পারে।

দিনাজপুরের ড্রাগন ফল জেলার চাগিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। দৃষ্টি নন্দিত এ গাছ ও ফল দেখে অনেকেই থমকে দাঁড়াচ্ছে। ড্রাগন ফল চাষে সফলতার কাহিনী শুনে অনেকে ছুঁটে আসছে। এ ফল চাষের আগ্রহ প্রকাশ করছেন। বছরের প্রায় সব মৌসুমেই ড্রাগন গাছে ফলন হওয়ায় বেকাররা ঝুঁকছেন ড্রাগন ফল চাষে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও অনাবাদি-পরিত্যক্ত জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করছেন।

চলতি বছর দিনাজপুরে ৭০ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ হয়েছে। প্রতি কেজি ড্রাগন ফল স্থানীয় বাজারে ৪৫০ টাকা থেকে সাড়ে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এ ফল চাষে কৃষককে কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ দিচ্ছে হর্টি কালচার সেন্টার ও কৃষি বিভাগ।

দিনাজপুর হর্টি কালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ এবং জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইকবাল জানান, দিনাজপুরে মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের উপযোগী। সুষ্ঠু বাজারজাতের ব্যবস্থা করা গেলে উদ্যোগী কৃষকদের মুখে হাসি ফুটবে বলে মনে করছেন তারা।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top