সেবা ডেস্ক: জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলা সীমান্তে হঠাৎ করেই দেখা দিয়েছে আগাম হাতির উপদ্রব। ফলে বকশীগঞ্জের সীমান্তে ঘেঁষা বসবাসকারী হাজার হাজার পরিবারের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বড় ধরনের ক্ষতি রোধে ও জানমালের নিরাপত্তায় বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার কামালপুর ইউপির সোমনাথপাড়া সীমান্ত দিয়ে প্রায় অর্ধ শতাধিক হাতি বাংলাদেশের এক কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করে। এর আগে রোববার থেকে হাতির দল সীমান্তে অবস্থান করে খাদ্যের সন্ধানে দেশের ভেতরে ঢুকছে। ফলে কামালপুর ইউপির সোমনাথপাড়া, গারোপাড়া, টিলাপাড়া, যদুরচর, সাতানীপাড়া, মির্ধাপাড়ার ছয় গ্রামের প্রায় ১০ হাজার পরিবার রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন।
উপজেলা কামালপুর ইউপির প্রায় ১০টি গ্রাম ভারতের মেঘালয় রাজ্যের আমপাতি জেলার মহেন্দ্রগঞ্জ সীমান্ত ঘেষাঁ। এই এলাকায় বাংলাদেশ-ভারত ভূখণ্ডে রয়েছে বিশাল বনভূমি। ভারতের গহীন বনাঞ্চলে রয়েছে অগণিত হাতি। তাই দল বেঁধে সমতল ভূমিতে চলাফেরা ও খাবারের জন্য সময়-অসময়ে হাতির পাল ১০টি গ্রামে চলে আসে। এতে গ্রামের গাছপালা দুমড়ে-মুচড়ে ধ্বংস লীলা চালায় হাতির পাল। এ সময় স্থানীয়রা হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে আগুন জ্বালিয়ে ও ফটকা বানিয়ে ঢাকঢোল পেটান।
এদিকে, স্থানীয় কৃষকরা ফসল রক্ষায় জমির চারদিকে বিদ্যুতের তার দিয়ে ঘেরাও করেছেন। এসব তারের এক পাশে বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া হয়। ফলে বিদ্যুতের স্পর্শ পেলে হাতির পাল পালিয়ে যায়।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দুই বছরে হাতির আক্রমণে বালিজুরি গ্রামের ইরফান আলী, হামির উদ্দিন বাবুল, সোমনাথপাড়া গ্রামের ফিলিপ সাংমা, রবি সাংমা, খ্রিস্টানপাড়া গ্রামের ষ্টারসন, ঝুলগাঁও গ্রামের মওজিবর রহমা, সিরাজ সাতানিপাড়ার সাজু মিয়াসহ আরো বেশ কজনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় অর্ধ শতাধিক।
দিঘলাকোনা গ্রামের আদিবাসী নেতা পিটিসং সাংমা বলেন, কৃষির উপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠী জীবিকার তাগিদে কলা, হলুদ, আদা ও পাহাড়ের পাদদেশের ফাঁকে ধান চাষ করেন। এসব ফসল খেতে হাতির পাল লোকালয়ে আসে। প্রতিরোধ করতে গেলে হাতিরা চড়াও হয়। এমনকি বাড়িঘরে হামলা চালায়। তাই প্রতি বছর বন্য হাতির সঙ্গে যুদ্ধ করে জীবন কাটাতে হয়।
স্থানীয় আবু তালেব জানান, বিগত বছরগুলোর অক্টোবরের শেষের দিকে হাতির পাল বাংলাদেশে ঢুকে রোপা আমন ধান খেয়ে ও মাড়িয়ে চলে যেত। তবে এবার অনেক আগে হাতির দল বাংলাদেশে এসেছে। এ সপ্তাহের শুরুতে শেরপুর সীমান্ত দিয়ে হাতির দলের দেখা মিলেছে।
৩৫ বিজিবি ব্যাটলিয়নের কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল এসএম আজাদ জানান, সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও জানমালের নিরাপত্তা রক্ষার্থে বিজিবি সদস্যদের টহল জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া লোকালয়ে হাতির পাল দেখলেই বিজিবি সদস্যদের খবর দিতে বলা হয়েছে।
জামালপুরের ডিসি এনামুল হক জানান, হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি হাতি উপদ্রুপ রোধে জেনারেটর ও বিদ্যুতিক বাতি সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।