শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী প্রতিনিধি, চট্টগ্রামঃ বাঁশখালী উপজেলার সাথে কুতুবদিয়ার যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছনুয়া-কুতুবদিয়া জেটিঘাট। বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নে অবস্থিত এ জেটিঘাট দিয়ে প্রতিদিন জীবনের নানা প্রয়োজনের তাগিদে লোকজন যাতায়ত করে থাকে। অতীব গুরুত্বপূর্ণ জেটিঘাটটি নির্মাণ করা হয়েছে কাঠের তক্তা দিয়ে। বেশ কয়েকমাস যাবৎ জেটিঘাটের বেহাল অবস্থা। যে কোন মুহূর্তে নড়বড়ে জেটিঘাটে ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দূর্ঘটনা।
জানা যায়, ছনুয়া টার্মিনাল জেটিঘাট হয়ে প্রতিনিয়ত মানুষ কুতুবদিয়া উপজেলায় যাতায়ত করে। এছাড়াও কুতুবদিয়ার ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব পীরে কামেল হযরত মৌলানা আব্দুল মালেক শাহ (রাহ:) এর মাজার জেয়ারত করার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার এমনকি বিদেশের অনেক ভক্ত-আশেক ও মুরিদরা মাজার জিয়ারত করতে যায় এই জেটিঘাট দিয়ে। অধিকাংশ মানুষের কুতুবদিয়া যাতায়তের একমাত্র মাধ্যম এই ছনুয়া জেটিঘাট। তাছাড়া, কুতুবদিয়া-ছনুয়ার অধিকাংশ লবণ ব্যবসায়ী ও বঙ্গপসাগরে মাছ ধরার ট্রলার প্রতিনিয়ত এই ঘাটে ভীড় জমায়। সাগর থেকে আহরিত মৎস্য বোট থেকে উত্তোলন করে নিয়ে আসার সময় ব্যবহার করা হয় ছনুয়া জেটিঘাট। সরেজমিনে দেখা যায়, জেটিঘাটে লোকজন পারাপার ও বোটবোঝাই মৎস্য নিয়ে জেটি হয়ে পার করাতে বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ভয়ে-অাতংকে তারা নিত্য প্রয়োজনে ব্যবহার করছে এ জেটিঘাট।
মো.সেলিম নামে কুতুবদিয়ার একজন ব্যবসায়ী যার বাড়ী বাঁশখালী উপজেলায়। দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে সে কুতুবদিয়ায় থাকে। তিনি বলেন, কুতুবদিয়ার অনেক ব্যবসায়ী লোকজন সপ্তাহে অন্তত ২ থেকে ৩ বার চট্টগ্রাম শহরে যায় ব্যবসায়ীক কাজে। এদের জন্য বাঁশখালী ছনুয়া হয়ে চট্টগ্রাম শহরে যাতায়ত সহজ হয় কিন্তু ছনুয়া জেটি পার হতে ব্যাপক ভয় করে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জেটি পারাপার থেকে মুক্তি চায় কুতুবদিয়া-বাঁশখালীর লোকজন। তাই কুতুবদিয়া-বাঁশখালীর পারাপারের একমাত্র অবলম্বন ছনুয়া জেটিঘাটটি মেরামত করা অতিব জরুরী হয়ে পড়েছে বলেও মনে করেন তিনি।কারণ এই জেটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পারাপার করে থাকে। শীঘ্রই এই জেটি ঘাট টি মেরামত করা না হলে যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
ছনুয়া টার্মিনাল জেটিঘাটের ইজারাদার শমসের শরীফির সাথে কথা বললে তিনি জানান, ছনুয়া জেটিঘাটটি বেশ কয়েকমাস যাবৎ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে তীব্র জোয়ার-ভাঁটার কারণে জেটিঘাটটি ব্যবহার করা বেশ ভয়ানক হয়। বিভিন্ন সময় গাছের তক্তাগুলো ভেঙ্গে দূর্ঘটনার শিকার হয় সাধারণ যাত্রীরা। প্রতি বছর সরকারিভাবে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকার টেন্ডার হয় এ জেটিঘাটের। দূর্ভোগ্যের বিষয় হচ্ছে, অতীব জরুরী জেটিঘাটের সংস্কারে কতৃপক্ষের কোন উদ্যোগ নেই। জেটিঘাটের দূরবস্থা লাঘবে পাঁকা করার কোন বিকল্প নাই বলেও তিনি জানান।
সরকারী ভাবে এই জেটিঘাটটি পাঁকা করে দেওয়া হলে সাধারন মানুষের অনেক কষ্ট কমে যেত। এ ঘাট দিয়ে চলাচলের মত অবস্থা এখন নেই বললেই চলে। তাই এই ঘাটটি পাঁকাভাবে র্নিমাণ করার জন্য বাঁশখালীর সাংসদ ও বাংলাদেশ অভ্যান্তরিণ নৌপরিবহন কর্তপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন সাধারণযাত্রীরা।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরিণ নৌপরিবহন চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক নয়ন শীল জানান, ছনুয়া জেটিঘাট সংস্কার করার জন্য ইতোমধ্যে ১২ লক্ষ টাকার টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসের মধ্যে সংস্কার করা হবে। এদিকে বিগত কয়েক বছর যাবৎ জেটিঘাটের রাস্তায় সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে উঠা ২টি দোকান উচ্ছেদ করা হবে বলেও তিনি জানান।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।