সেবা ডেস্ক: মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র গ্রন্থ কোরআন শরীফে ঘোষণা করেছেন,
مَن جَاء بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا وَمَن جَاء بِالسَّيِّئَةِ فَلاَ يُجْزَى إِلاَّ مِثْلَهَا وَهُمْ لاَ يُظْلَمُونَ
‘যে একটি সৎকর্ম করবে, সে তার দশগুণ (প্রতিদান) পাবে এবং যে, একটি মন্দ কাজ করবে, সে তার সমান শাস্তিই পাবে। বস্তুতঃ তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না।’ (সূরা: আনআম, আয়াত ১৬০)।
উল্লেখিত আয়াতের মাধ্যমেই বুঝে আসে যে, রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মানুষকে পূণ্য বা সওয়াব দানের ব্যাপারে অনেক বেশি আগ্রহী। মানুষ যে কোনো আমলই করবে তার পরিবর্তে আল্লাহ তায়ালা তাকে বেশি বেশি প্রতিদান দিতে চান। আবার কেউ যদি মন্দ কাজ করে ফেলে তবে তাকে তার মন্দ কাজ অনুযায়ী প্রতিদান দিয়ে থাকেন, তাতে কম-বেশি করেন না।
মানুষকে গুনাহমুক্ত করতে কোরান হাদিসে ঘোষিত আছে অনেক উপায়-উপকরণ। যাতে মানুষ গুনাহমুক্ত জীবন লাভ করতে পারে। গুনাহমুক্ত হয়ে সাওয়াব বা প্রতিদান লাভে ঘোষণা করেছেন অনেক সহজ কাজ। যার একটি হলো যথাযথভাবে ওজু করা।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যখন কোনো মুমিন অথবা মুসলিম বান্দা ওজু করে এবং মুখমণ্ডল ধোয়, তখন তার মুখমণ্ডল থেকে তার চোখের দ্বারা সংঘটিত সব গুনাহ (মুখ ধোয়ার) পানির সঙ্গে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে ঝরে যায়।’
যখন সে তার উভয় হাত ধোয়, তখন তার উভয় হাতের দ্বারা সংঘটিত গুনাহ (হাত ধোয়ার) পানির সঙ্গে বা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে ঝরে যায়। অতঃপর সে সব গুনাহ থেকে পবিত্র হয়ে যায়।’ (তিরমিজি)।
উল্লিখিত হাদিসের আলোকে বুঝা যায়, ওজুর সময় বান্দা যে সব অঙ্গগুলো ধোয়, সে সব অঙ্গের দ্বারা ঘটিত সব গুনাহসমূহ ওজুকারী থেকে দূর হয়ে যায়। এটা মুমিন বান্দার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার একান্ত রহমত। গুনাহমুক্ত জীবন লাভে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চমৎকার একটি উপমা তুলে ধরেছেন-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, (তিনি বর্ণনা করেন)
তোমরা বলো, যদি তোমাদের মধ্যে কারো দরজার (বাড়ির) সামনে দিয়ে নদী প্রবাহিত হয় এবং ওই ব্যক্তি তাতে দৈনিক ৫ বার গোসল করে; তাহলে তার শরীরে কি কোনো ময়লা অবশিষ্ট থাকবে?
সাহাবাগণ উত্তর দিলেন, ‘না’, কোনো ময়লাই আর অবশিষ্ট থাকবে না।’ রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘সুতরাং (দৈনিক) ৫ বার নামাজের দৃষ্টান্ত হলো এই যে, আল্লাহ এর মাধ্যমে (মানুষের) গুনাহসমূহকে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন। (বুখারি ও মুসলিম)।
উল্লিখিত হাদিসে গুনাহমুক্ত জীবন লাভে ৫ ওয়াক্ত নামাজের কথা বলা হয়েছে। আর ওজু ছাড়া নামাজ কবুল হবে না মর্মে প্রিয় নবী হাদিস বর্ণনা করেছেন।
আর যারা প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, তারা নামাজের আগে ওজুও করবে। আর ওজুতে ব্যবহৃত প্রতিটি অঙ্গের গুনাহও পানির সঙ্গে ঝরে যাবে। সুতরাং গুনাহমুক্ত জীবন লাভে ওজু ও নামাজের বিকল্প নেই।
অতএব, মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে গুনাহমুক্ত জীবন লাভে যথাযথভাবে ওজু সম্পাদন করার ও জামাতের সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।