সেবা ডেস্ক: আজ বাংলাদেশের প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদীর ৬৭তম জন্মদিন। মঞ্চ, ছোটপর্দা, বড়পর্দায় সমান তালে দাপট দেখানোর মতো অভিনেতার মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। ১৯৫২ সালের ২৯ শে মে ঢাকার নারিন্দায় জন্ম নিয়েছিলেন গুণী এই অভিনেতা।
মঞ্চ দিয়ে অভিনয় জগতে পা রাখলেও অভিনয়ের সব স্তরেই বিচরণ করেন এই গুণী অভিনেতা। টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে সমান তালে তিন দশকের পদার্পণ ছিল তার। তবে ব্যক্তিজীবনটা তিনি ছিলেন পুরোটাই সাদামাটা। আজ তার জন্মদিনে ভক্ত ও অভিনয় জগতের কলাকুশলীরা নানা ভাবে তাকে স্মরণ করছেন।
হুমায়ুন ফরিদীর অভিনয় জীবনের শুরু ছাত্রজীবনে মঞ্চ নাটকের মধ্য দিয়ে। টিভি নাটকে প্রথম অভিনয় করেন আতিকুল হক চৌধুরীর প্রযোজনায় ‘নিখোঁজ সংবাদ’-এ। তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য টিভি নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘সাত আসমানের সিঁড়ি’, ‘একদিন হঠাৎ’, ‘চাঁনমিয়ার নেগেটিভ পজিটিভ’, ‘অযাত্রা’, ‘পাথর সময়’, ‘দুই ভাই’, ‘শীতের পাখি’, ‘সংশপ্তক’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘নীল আকাশের সন্ধানে’, ‘দূরবীন দিয়ে দেখুন’, ‘ভাঙনের শব্দ শুনি’, ‘বকুলপুর কতদূর’, ‘মহুয়ার মন’, ‘সমুদ্রে গাঙচিল’, তিনি একজন’, ‘চন্দ্রগ্রস্ত’, ‘কাছের মানুষ’, ‘মোহনা’, ‘বিষকাঁটা’, ‘শৃঙ্খল’, ‘ভবের হাট’ প্রভৃতি।
মঞ্চে তিনি প্রথম নির্দেশনা দেন স্কুল জীবনে, নাটকের নাম ছিল ‘ভূত’। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটক ‘মুনতাসীর ফ্যান্টাসি’, ‘ফণীমনসা’, ‘শকুন্তলা’, ‘কীত্তনখোলা’, ‘কেরামত মঙ্গল’ প্রভৃতি। টিভি নাটক অথবা মঞ্চে সেলিম আল দীন এবং নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু জুটির বাইরে হুমায়ুন ফরিদীর সর্বাধিক সংখ্যক এবং সর্বাধিক সফল কাজ ছিল হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে। আর ‘সংশপ্তক’ ধারাবাহিকে তার অভিনীত চরিত্র কানকাটা রমজানের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই।
চলচ্চিত্রে আসেন নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’ ছবির মাধ্যমে। আর বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র হিসেবে প্রথম ছিল প্রয়াত গুনী নির্মাতা শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘সন্ত্রাস’ ছবিটি। এছাড়া তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ছবি হচ্ছে ‘ব্যাচেলর’, ‘ভন্ড’, ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামলছায়া’, ‘একাত্তরের যীশু’, ‘মায়ের মর্যাদা’, ‘বিশ্বপ্রেমিক’, ‘পালাবি কোথায়’ ইত্যাদি।
বাংলা চলচ্চিত্রে খল চরিত্রে তিনি যোগ করেছিলেন এক নতুন মাত্রা। ‘সন্ত্রাস’ ছবির মাধ্যমে খলনায়ক চরিত্র শুরু হয় তার। তিনি ‘মাতৃত্ব’ ছবির জন্য সেরা অভিনেতা শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ২০০৪ সালে। নিয়মিত টিভি অভিনয়ের পাশাপাশি হুমায়ুন ফরিদী তেমন একটা লিখতেন না। তবে কিছু টেলিফিল্ম, ধারাবাহিক ও এক ঘণ্টার নাটক নির্মাণ করেছেন তিনি।
দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত এবং রোমান্টিক এ মানুষটি ব্যক্তিগত জীবনে প্রথমে ফরিদপুরের মেয়ে মিনুকে বিয়ে করেন। তখন এ বিয়ে সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। এ ঘরে তাদের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। নাম দেবযানি। পরে তিনি ঘর বাঁধেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফার সঙ্গে। কিন্তু ২০০৮ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তবে ব্যক্তিজীবন ছাপিয়ে হুমায়ুন ফরিদী সবার প্রিয় অভিনেতা হিসাবে এখনও আবিষ্ট করে রেখেছেন অগুনতি দর্শক-সমালোচকদের। দর্শকহৃদয়ে আজীবন বেঁচে থাকবেন হুমায়ুন ফরিদী।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।