ঈদকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের তাঁতপল্লী ব্যাস্তসময় পার করছে

S M Ashraful Azom
0
ঈদকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের তাঁতপল্লী ব্যাস্তসময় পার করছে
জহুরুল ইসলাম, বেলকুচি প্রতিনিধি: ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তাঁত পল্লী গুলো কর্মমুখর হয়ে উঠেছে। চাহিদা অনুযায়ী ঈদের শাড়ী-লুঙ্গী, থ্রি-পিছ তৈরিতে এখন তাঁত মালিক ও শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার বিভিন্ন তাঁত ফ্যাক্টরি গুলোতে তৈরি হচ্ছে উন্নতমানের আধুনিক রুচিশীল কাপড়সহ ঈদ পোশাক। জামদানি, সুতি জামদানি, সুতি কাতান, চোষা, বেনারসি, শেড শাড়ি, লুঙ্গিসহ নানা ধরনের পোশাক তৈরি হচ্ছে এখানে। শাড়ির ওপরে বর্ণিল সুতা, বাক ও চুমকিরও কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া কাপড়ের ওপর প্রিন্টসহ রংতুলি দিয়ে নান্দনিক ও মনোমুগ্ধকর নানা নকশাও দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন নকশার তৈরি কাপড়ের চাহিদা এখন দেশ ছাড়িয়ে এর সুনামের সাথে ছড়িয়ে পড়েছে ভারত, আমেরিকা ও ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে।

সিরাজগঞ্জের তৈরি বেনারসি শাড়ি দেশে বিদেশে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যে কারণে ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী কাপড় সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁত কারখানার মালিকরা। কাপড়ের উৎপাদন বাড়াতে দিনরাত কাজ করে চলেছেন তাঁত শ্রমিকরা।

কারখানার মালিক ও শ্রমিকদের কোলাহলে সরব হয়ে উঠেছে তাঁতপল্লী গুলো। তাঁতের খট-খট ও ঝুম ঝুম শব্দ জানান দিচ্ছে সামনে ঈদ আসছে।

কাপড়ের চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দামও বেড়েছে অনেক। দাম বেশি হলেও চাহিদার কোনো কমতি না থাকায় বেজায় খুশি তাঁত মালিক, শ্রমিকসহ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। জেলার তাঁত প্রধান এলাকা হিসেবে খ্যাত বেলকুচির শেরনগর, চন্দনগাঁতী বসুন্ধারা, তামাই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তাঁতিরা কাপড় বুনছেন আপন মনে। কেউ কেউ আবার কাজের ফাঁকে ফাঁকে গানও গাচ্ছেন। তাঁত মালিকরা ব্যস্ত পাইকারদের নিয়ে। একই সঙ্গে পুরুষদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নারী শ্রমিকরাও নলীভরা, সুতাপারি করা, মাড়দেয়া ও রংতুলিতে নকশা আঁকাসহ কাপড় বুননের কাজেও সহযোগিতা করছেন।

এদিকে, বিবিয়ানা, রং, কে-ক্রাফট ও নগরদোলাসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় বুটিক প্রতিষ্ঠানের কাপড় এখন বেলকুচি অঞ্চলে তৈরি হয়। বুটিক হাউসগুলোর নিজস্ব ডিজাইনে রেশম সুতা, খাদি, নয়েল, ডুপিয়ান ও অ্যান্ডি সুতা ব্যবহার করে তাতে প্যালেস ও জরি মিশ্রিত করে কাপড় তৈরি করা হচ্ছে। বুটিক হাউসের ওড়না, থান কাপড় ও অ্যান্ডি থান কাপড়ের ফেব্রিক্স তৈরি করা হচ্ছে এখানে। এ দিয়ে নানা ধরনের পোশাক তৈরি করছে বুটিক হাউসগুলো।

তরুণ-তরুণীদের কথা মাথায় রেখে তাঁতিরা উন্নতমানের জামদানি নকশা, শেড ও থান কাপড় তৈরি করছে। এ দিয়ে পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ আর ফতুয়া তৈরি হচ্ছে। জামদানি থ্রি-পিস দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা এবং চেক থ্রি-পিস ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।অপরদিকে, ঈদকে সামনে রেখে ভারতের বাজারের সঙ্গে টক্কর দিতে ক্রেতাদের নজর কাড়তে ভারতের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সিরিয়ালের নাম অনুযায়ী কাপড়ের নাম রাখা হচ্ছে। 

কাপড়গুলো হাফ সিল্কের ওপর ঝুটের মনোমুগ্ধকর নকশা করা। ইতোমধ্যেই এ শাড়ি ক্রেতাদের মন কেড়েছে। বাজারে এর দাম দুই থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মনিহার টেক্সটাইলের মালিক আব্দুল মজিদ খাঁন বলেন বর্তমানে কাপড়ের চাহিদা ভাল সামনে ঈদ কিন্তু ঠিক মত বিদ্যুৎ না থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে কাপড় তৈরিতে। রুচিশীল ক্রেতাদের বিষয়টি খেয়াল রেখেই ভারত থেকে জুট এনে তা দিয়ে হাতে বিভিন্ন নকশা করে শাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাজারে এ শাড়ির চাহিদা আকাশছোঁয়া। পাইকাররা অগ্রিম টাকা দিচ্ছে এ শাড়ির জন্য। চাহিদার কথা মাথায় রেখে তাঁতিরা দিনরাত এক করে এ কাপড় তৈরি করে যাচ্ছেন।

এদিকে নাহিদ উইভিং ফ্যাক্টরি মালিক দেলবার হোসেন বলেন কাপড়ের দামের চেয়ে সুতা রং ও অন্যান্য কাচামালের দাম বেশী হওয়ায় শাড়ী তৈরি করা অনেক কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে।


⇘সংবাদদাতা: জহুরুল ইসলাম
ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top