রফিকুল আলম, ধুনট প্রতিনিধি: স্ত্রীর নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) থেকে টাকা তুলে নিয়ে তা পরিশোধ না করে উল্টো তাকে তালাক দিয়েছে আসমত আলী নামে এক যুবক। তালাকপ্রাপ্ত ওই নারী আবারও স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে সাবেক স্বামীর বাড়িতে অনশনে বসেছিলেন। কিন্ত শনিবার রাতে সাবেক স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন তাকে নির্যাতনের এক পর্যায়ে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় অনশন ভঙ্গ করে পালিয়ে এসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২০ বছর আগে ধুনট উপজেলার উলিপুর গ্রামের মোকছেদ মন্ডলের মেয়ে হাসিনা খাতুনের সঙ্গে মথুরাপুর গ্রামের আসমত আলীর বিয়ে হয়। তাদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। আসমত স্ত্রী হাসিনাকে দিয়ে কৌশলে বিভিন্ন এনজিও থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ঋণ ওঠান।
এ অবস্থায় ঋণের টাকা পরিশোধ না করেই দুই মাস আগে হাসিনাকে তালাক দেন আসমত। তালাকের পর এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের দায় গিয়ে পড়ে হাসিনার ওপর। একপর্যায়ে ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় আসমতের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন হাসিনা। কিন্তু এতেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে গত ১৮মে বিকেল থেকে ফের স্ত্রীর মর্যাদা পেতে আসমতের বাড়িতে অনশন শুরু করেছিল হাসিনা।
এ বিষয়ে হাসিনা খাতুন জানান, তার মাথার ওপর প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ঋণের বোঝা। এই টাকা পরিশোধ করা তার একার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব না। এ কারণে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান নিয়ে অনশন করছেন তিনি। শনিবার রাতে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন নির্যাতনের এক পর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। সেখান থেকে পালিয়ে এসে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন তিনি।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে আসমত আলী জানান, পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তাকে তালাক দিয়েছেন। তারপরও হাসিনা অবৈধভাবে তার বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিল। হাসিনাকে নির্যাতন কিংবা শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করা হয়নি। স্বেচ্ছায় অনশন ভেঙ্গে বাড়ি ছেড়ে গেছে বলে জানান তিনি।
ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হাফিজুর রহমান বলেন, গৃহবধুর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে ধুনট থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আবদুল জব্বার বলেন, হাসিনা খাতুন ঋণের টাকা পরিশোধের বিষয়ে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার কথা ছিল। তবে মীমাংসা না হওয়ার বিষয়ে পরে তাকে জানানো হয়নি। স্বামীর বাড়িতে অনশন করায় নির্যাতন কিংবা শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টার বিষয়েও তার জানা নেই। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
⇘সংবাদদাতা: রফিকুল আলম
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।