এম এ মাজেদ, সাইফুল, ফেনী: গতকাল সোমবার ফেনী জেলার অন্তরগত সোনাগাজী কমিউনিটি সেন্টার মাঠস্থ ইসলামী নব জাগরন সংঘের উদ্যোগে ১১তম তাফসীরুল কুরআন মাহফিল ডা.মুহাম্মাদ নুর উল্ল্যাহ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান মেহমান হিসাবে বয়ান পেশ করেন ঢাকা থেকে আগত আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মুফাসির হাফেজ মাওলানা এমদাদ উল্যাহ্, সভায় প্রধান ওয়ায়েজিন হিসাবে বয়ান পেশ করেন, ঢাকা থেকে আগত আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মুফাসিরে কোরআন ও কওমী ওলামায়ে কেরামের সূর্য সন্তান হযরত মাওলালা হাফেজ নিজাম বিন বাহাউদ্দীন সাহেব।
বিশেষ মেহমান হিসেবে বয়ান পেশ করের, ছাগলনাইয়া, পাঠান নগর আমিনিয়া ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল,মাওলানা খোন্দকার মশিউর রহমান সহ আমন্ত্রিত মেহমানদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সোনাগাজীর প্যানেল মেয়র, শেখ কলিম উল্যাহ্ রয়েল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মুহাম্মাদ মোশারফ হোসাইন তুহিন, ও নবজাগরন সংঘের সভাপতি মুহাম্মাদ আবু তাহের তানু মিয়া, নব জাগরন সংঘের সাধারন সম্পাদক মাষ্টার মোস্তাফিজুর রহমান, (বি,এস,সি) প্রমুখ।
প্রধান ওয়ায়েজিন তার বয়ানে বলেন প্রিয় হাজেরিন...
আমার আজ বয়ানের বিষয় হলো
মুনাফিকের কাকে বলে?
মুনাফিকি তথা কপটতা একটি মারাত্মক রোগ। বিশ্বাসগত দিক থেকে কুফরির নিকৃষ্টতম প্রকার হলো মুনাফিকি। যার ভিতরের অবস্থা প্রকাশ্যের বিপরীত তাকে নিফাক বলে। যার মধ্যে নিফাক রয়েছে সে মুনাফিক। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে মুনাফিকদের ওহীর মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়েছে। আজও মুনাফিকদের চরিত্র বর্তমান সমাজে রয়েছে। দিন দিন এ সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কুরআন ও সুন্নার আলোকে মুনাফিকির পরিচয় ও পরিণাম তুলে ধরা হলো-মুনাফিকের পরিচয়:
মুনাফিকের পরিচয় সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘তরা যখন ঈমানদার লোকদের সঙ্গে মিলিত হয় তখন বলে আমরা ঈমান এনেছি। কিন্তু যখন নির্জনে তারা তাদের শাইতানদের সঙ্গে মিলিত হয় তখন তারা বলে, আসলে আমরা তোমাদের সঙ্গেইে আছি, আর আমরা তাদের সঙ্গে ঠাট্টাই করি মাত্র। (সুরা বাক্বারাহ : আয়াত ১৪)হজরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রাদিয়াল্লাহ আনহু হতে বর্ণিত যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, চারটি স্বভাব যার মধ্যে থাকে সে খাঁটি মুনাফিক। আর যার মধ্যে উক্ত স্বভাবগুলোর কোন একটি থাকে, তা ত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকির একটি স্বভাব থেকে যায়- ১. তার কাছে কোনো আমানত রাখলে খিয়ানত করে ২. সে কথা বললে মিথ্যা বলে ৩. ওয়াদা করলে ভঙ্গ করে ৪. ঝগড়া করলে গাল-মন্দ করে। (বুখারি, মুসলিম, নাসাঈ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ) সুতরাং মুনাফিকদের পরিণামও ভয়াবহ। এ ব্যাপারেও কুরআন ও সুন্নায় কঠোর ভাষায় হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
মুনাফিকির পরিনাম:
আল্লাহ বলেন, ‘হে নবি! কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করুন এবং তাদের সম্পর্কে কঠোর নীতি অবলম্বন করুন। আর তাদের পরিণতির হচ্ছে জাহান্নাম এবং তা অত্যন্ত নিকৃষ্ট স্থান। (সূরা তাওবাহ : আয়াত ৭৩)আল্লাহ আরো বলেন, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্থানে অবস্থান করবে। (সুরা নিসা : আয়াত ১৪৫)
আল্লাহ ওয়াদা করেছেন, মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক নারীদের এবং কাফেরদের জন্য রয়েছে দোজখের আগুন। তাতে তারা চিরদিন থাকবে। সেটাই তাদের জন্যে যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের প্রতি অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে রয়েছে স্থায়ী আজাব। (সূরা তাওবাহ আয়াত ৬৮)
হজরত হুযাইফা ইবনে ইয়ামা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নিফাক বা মুনাফিক রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে ছিল আজকের দিনেও আছে, আর সেটা হল ঈমানের পরে কুফরি করা অর্থাৎ ঈমান প্রকাশ করে আল্লাহর দীনের বিরোধী কাজ করা। (বুখারি)
মুনাফিকরা প্রত্যেকেই দ্বিমুখী আচরণকারী। এক মুখে তারা মুমিনদের সঙ্গে মিলিত হয়। অন্য মুখে ভোল পাল্টিয়ে তারা কাফিরদের সঙ্গে মিলিত হয়। সুতরাং আল্লাহ তাআলার নিকট প্রার্থণা, সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে সব ধরনের নিফাকি থেকে হিফাজত করুন। আল্লাহর বিধানের ওপর অটল ও অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন।
⇘সংবাদদাতা: এম এ মাজেদ, সাইফুল
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।